পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Apr 11, 2020, 8:26 PM IST

Updated : Apr 11, 2020, 10:04 PM IST

ETV Bharat / state

ফিরতে পারেননি সঙ্গীরা, চারটি ট্রলার নিয়ে জাতীয় সড়কে একা যুবক

ছত্তিশগড়ের রাপুরের বাসিন্দা কুঁয়ার সিং । পেশায় বড় ট্রলারের চালক । ভিলাই থেকে বড় বড় সব যন্ত্রাংশ ট্রলারে লোড করে বেশ কয়েকটি গাড়ি মিলে রওনা দিয়েছিল মাসখানেক আগে । গন্তব্য আসানসোলের জামুড়িয়া ।

দু’নম্বর জাতীয় সড়কই এখন সংসার কুঁয়ার সিংয়ের
দু’নম্বর জাতীয় সড়কই এখন সংসার কুঁয়ার সিংয়ের

আসানসোল, 11 এপ্রিল: এ যেন এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে একা দিনযাপন । সহকর্মী ও সঙ্গীরা বাড়ি গিয়ে লকডাউনে আর ফিরতে পারেনি । চারটি বড় ট্রলারে ভারি ভারি যন্ত্রাংশ নিয়ে একা পথের উপর পড়ে আছেন এক যুবক । তিনি জানেননা কবে লকডাউন উঠবে । কবে ফিরতে পারবেন বাড়ি তাও অজানা তাঁর । আপাতত দু’নম্বর জাতীয় সড়কই তাঁর সংসার । মনের ভেতর আতঙ্ক, কোরোনা ভাইরাস থাবা বসাবে না তো ?

ছত্তিশগড়ের রায়পুরের বাসিন্দা কুঁয়ার সিং । পেশায় বড় ট্রলারের চালক । ভিলাই থেকে বড় বড় সব যন্ত্রাংশ ট্রলারে লোড করে বেশ কয়েকটি গাড়ি মিলে রওনা দিয়েছিল মাসখানেক আগে । গন্তব্য আসানসোলের জামুড়িয়া । নিয়মমাফিক এই বড় মালবাহী গাড়িগুলি একসঙ্গেই চলে । একটি গাড়ি থামলে বাকিরাও দাঁড়িয়ে যায় । দু’নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে আসার সময় হঠাৎই সঙ্গীদের গাড়িগুলি থেকে কুঁয়ার সিংয়ের গাড়ি আলাদা হয়ে যায় । সেই কারণেই আসানসোলের কাল্লা মোড়ের কাছে দু’নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে চারটি গাড়ি দাঁড় করিয়েছিলেন কুঁয়ার সিং এবং তাঁর সহযোগী । খবর নিয়ে দেখে পিছনের গাড়িগুলি আসতে কয়েকদিন দেরি আছে । এই কথা শুনে কুঁয়ার সিংয়ের বাকি সঙ্গীরা চারটি গাড়ির সঙ্গে একা কুঁয়ার সিংকে রেখে বাড়ি চলে যায় । ভেবেছিলেন দু-একদিনের ব্যাপার, সবাই ফিরে আসবে । পিছনের গাড়িগুলোও ততদিনে চলে আসবে । তারপর আবার সবাই মিলে গাড়ি নিয়ে গন্তব্যের দিকে এগোনো যাবে । কিন্তু তার মাঝেই কোরোনার থাবা, দেশজুড়ে লকডাউন । ফিরতে পারেননি তাঁর সঙ্গীরা । পিছনের গাড়িগুলিও ভিন রাজ্যে আটকে পড়েছে । আর কাল্লা মোড়ের কাছে দু’নম্বর জাতীয় সড়কে একাই চারটি গাড়ি নিয়ে পড়ে আছেন কুঁয়ার সিং ।

দু’নম্বর জাতীয় সড়কই এখন সংসার কুঁয়ার সিংয়ের
হাতের টাকা শেষ হয়ে আসছে । আনাজপাতি যেটুকু আছে তাই দিয়েই দিন গুজরান হচ্ছে । গাড়ির ভেতরেই রান্না, খাওয়া, ঘুমানো । কখনও কখনও মোবাইলে প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলা । মোবাইল চার্জ দেওয়ারও উপায় নেই । দিনে একবার গিয়ে অনেক দূরে ট্র্যাফিক গার্ড থেকে ফোন চার্জ করে আসেন । গত 19 মার্চ থেকে এভাবে একা পড়ে আছেন রায়পুরের কুঁয়ার । আদৌ কি কোনওদিনও প্রিয়জনের কাছে ফেরা হবে ? প্রশ্নটা বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে মনে । যেভাবে কোরোনার সংক্রমণ বাড়ছে তাতে সেও যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন এই দিকশূন্যপুরে কে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে ?
Last Updated : Apr 11, 2020, 10:04 PM IST

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details