পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Aug 4, 2019, 10:50 AM IST

Updated : Aug 4, 2019, 6:12 PM IST

ETV Bharat / state

নেতাজিনগরে দম্পতি খুনের কিনারা, বিহার থেকে গ্রেপ্তার রংমিস্ত্রি

নেতাজিনগর খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হল রং মিস্ত্রি ৷ বিহারের কাটিহার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে ৷ নাম মহম্মদ হামরুজ আলম ৷

ফাইল ফোটো

কলকাতা, 4 অগাস্ট : অবশেষে নেতাজিনগরে দম্পতি খুনের কিনারা করল কলকাতা পুলিশ । বিহার থেকে গ্রেপ্তার করা হল ঠিকা রংমিস্ত্রি মহম্মদ হামরুজকে । খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে ছিল সে । বিহারের কাটিহার থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে । পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধের কথা স্বীকার করেছে হামরুজ । উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কিছু নগদ টাকা এবং নেতাজিনগরের বাড়ি থেকে খোয়া যাওয়া কিছু সামগ্রী । ধৃতকে আজ স্থানীয় আদালতে পেশ করে ট্রানজ়িট রিমান্ড চেয়েছে কলকাতা পুলিশ ।

29 জুলাই রাত 10-11 টার মধ্যে খুন হন বৃদ্ধ দম্পতি দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্না মুখোপাধ্যায় । বেশ কয়েকটি তত্ত্ব উঠে এলেও, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা দেখে পুলিশ প্রথম থেকে সন্দেহ করছিল যে টাকা পয়সা লুটের জন্যই এই খুন । যদিও কোনও কোনও মহল থেকে সন্দেহ করা হয়, প্রোমোটিংয়ের জন্য বৃদ্ধ দম্পতি তাঁদের বাড়ি না দেওয়ার জেরে এই খুন । সন্দেহ গতি পায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর । ইঙ্গিতপূর্ণভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, " কারও সম্পত্তি জোর করে দখল করে নেওয়া যাবে না । যদি কেউ মনে করে থাকে, একাকী বৃদ্ধ দম্পতিকে খুন করে তাঁদের সম্পত্তি দখল করে রেহাই পেয়ে যাবে, তাহলে তারা ভুল করছে ।"

তবে দুঁদে গোয়েন্দারা প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করেছিলেন, এই খুনের উদ্দেশ্য টাকা পয়সা হাতানো ।

নেতাজিনগরের অশোকা অ্যাভিনিউয়ের দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের দোতলা বাড়িতে পৌঁছে, সিঁড়ির মাঝের দরজার সামনে দিলীপবাবুর স্ত্রী স্বপ্নার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ তাঁর নাকে রক্তের দাগ ছিল । হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল, পেছন থেকে তাঁর গলায় চাপ দেওয়া হয়েছে । সম্ভবত সেটাই মৃত্যুর কারণ । চাপের কারণেই তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এসেছে । দোতলার নিজের ঘরে উদ্ধার হয় দিলীপবাবুর দেহ । তাঁর মুখে গোঁজা ছিল বালিশের কভার দেওয়ার একটি তোয়ালে । চাপা দেওয়া ছিল একটি বালিশ । ঘরে থাকা 10 টি আলমারির মধ্যে 9টি আলমারি খোলা ছিল । খোয়া যায় বেশ কিছু গয়না, প্রায় এক লাখ টাকা নগদ, দুটি মোবাইল ফোন ।

ধৃত মহম্মদ হামরুজ আলম

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রোমোটিং কিংবা অন্য কোনও কারণে খুন হলে এভাবে আলমারি খুলে জিনিসপত্র লুটপাট করা হত না । সেই বক্তব্য খুব একটা উড়িয়ে দেয়নি পুলিশ । তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার ক্ষেত্রে এই কাজ করা হয়ে থাকতে বলেও একটা সন্দেহ ছিলই ।

পুলিশ জানতে পারে ঘটনার দিন পাঁচেক আগে পর্যন্ত দিলীপবাবুর বাড়িতে রং এবং ছাদ সারাইয়ের কাজ হয় । এই কাজ করা হয়েছিল এক ঠিকাদারের মাধ্যমে । ওই ঠিকাদার বৃদ্ধের পূর্ব পরিচিত । আসলে দিলীপবাবু একটা সময় রুফ রিপেয়ারিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । সেই সূত্রে এই ধরনের মিস্ত্রি এবং ঠিকাদারদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল তাঁর । তদন্তকারীরা ওই বাড়ির পরিচারিকা লতার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, বাড়িতে কাজ করানোর সময়েও অনেকটাই খোলামেলা ভাবে মিশতেন ওই দম্পতি । মিস্ত্রিদের সামনেই আলমারি খুলে টাকাপয়সা বের করতেন ।

তদন্তের শুরুতেই ওই ঠিকাদারের খোঁজ নেয় পুলিশ । তাকে জেরা করে জানা যায়, দিলীপবাবুর বাড়িতে কাজের জন্য তিনি ঠিকা মিস্ত্রি ভাড়া করে আনতেন । 6-7 জন ঠিকা মিস্ত্রি এই কাজ করেছিল । পুলিশ তাদের প্রত্যেকের খোঁজ শুরু করে । এর মধ্যে দেখা যায় হামরুজ কলকাতার অস্থায়ী ঠিকানায় নেই । তখনই খটকা লাগে পুলিশের । খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় হামরুজের বাড়ি বিহারের কাটিহারে । সেখানে যায় কলকাতা পুলিশের টিম । অবশেষে গতরাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ।

Last Updated : Aug 4, 2019, 6:12 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details