কলকাতা, ২ ফেব্রুয়ারি: বিপদের আরেক নাম নোভেল কোরোনা ভাইরাস । পরিস্থিতি যাতে ভয়ঙ্কর দিকে না যায় সেজন্য রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখার কথা বলছে সরকারি ডাক্তারদের একাংশ । ইতিমধ্যেই তা নিয়ে পদক্ষেপ করেছে স্বাস্থ্য দপ্তরও ।
নোভেল কোরোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই কলকাতায় বেলেঘাটা আইডি অ্যান্ড বিজি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে । SSKM, NRS মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কামারহাটির কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতাল এবং স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নোভেল কোরোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থার কথা বলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর । এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "সোমবারের মধ্যে সাতটি হাসপাতালে নোভেল করোনা ভাইরাসের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে । প্রতিটি আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য অন্ততপক্ষে পাঁচটি করে বেড রাখার কথা বলা হয়েছে।" আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে জায়গাকে চিহ্নিত করেছে সেখানে ৪০টির মতো বেড রাখার ব্যবস্থা হতে পারে ৷
রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখার কথা বলছে সরকারি ডাক্তারদের একাংশ কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখার কথা বলছে সরকারি ডাক্তারদের একাংশ । অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক ডা. মানস গুমটা বলেন, "নোভেল কোরোনা ভাইরাস এখন অবধারিতভাবে বিপদ । যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সরকারের কাজ করা উচিত । যাতে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর জায়গায় না চলে যায় ৷ একটা, দু'টো জায়গায় আইসোলেশন ওয়ার্ড করে খুব একটা উপকার হবে বলে আমাদের মনে হয় না । পশ্চিমবঙ্গে যে পরিকাঠামো রয়েছে তাতে সব জায়গাতেই আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা যেতে পারে ।" তিনি আরও বলেন,"নোভেল কোরোনা ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে যা যা করণীয় তা শীঘ্রই সরকারের করা উচিত । নোভেল কোরোনা ভাইরাস নতুন আতঙ্ক তৈরি করেছে । এর আগে ডেঙ্গি পশ্চিমবঙ্গে এপিডেমিকের চেহারা নিয়েছিল ।"
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখার জন্য কতটা পরিকাঠামো রয়েছে? প্রয়োজনে এই ওয়ার্ড চালু করা কি সম্ভব? ডা. মানস গুমটা বলেন, "নিশ্চয় সম্ভব । একটা সময় TB রোগীদের আইসোলেশনে রাখা হতো । এখন আর প্রয়োজন পড়ে না । কিন্তু, সেই পরিকাঠামো বহু জায়গায় রয়ে গিয়েছে। সেটাকে ব্যবহার করা যেতেই পারে । প্রতিটি জেলা হাসপাতালে একসময় আইসোলেশন ওয়ার্ড ছিল ।" মানসবাবু বলেছেন, "আগুন লাগলে তবেই জল ঢালতে দৌড়ব, এটা ঠিক নয় । আগুন যাতে না লাগে তার ব্যবস্থা করা উচিত । সরকারের উচিত প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি মেডিকেল কলেজে আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা রাখা৷"
সরকারি ডাক্তারদের অন্য একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. সজল বিশ্বাস বলেন, "এ রাজ্যে যে সব ইনফেকশাস রোগ রয়েছে তার জন্য একমাত্র হাসপাতাল বলতে গেলে সেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল । অথচ কোনও একটি রোগের এপিডেমিক হয় তখন প্রত্যেকটি মেডিকেল কলেজে এই ধরনের একটি করে স্পেশাল ওয়ার্ড তৈরি করা উচিত ৷" তিনি আরও বলেন, "এটা খুবই জরুরি । কারণ, খুব দ্রুত রোগীদের আইসোলেট করে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা গেলে রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে ।"