পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Apr 27, 2021, 12:39 PM IST

Updated : Apr 27, 2021, 3:02 PM IST

ETV Bharat / state

ভাঙড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু করোনা রোগীর, গাফিলতির অভিযোগ

পরিবারের দাবি, সোমবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বাড়লে সাড়ে 10টা নাগাদ সুজন মণ্ডল একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে মাকে নিয়ে নলমুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে । সেই সময় কোভিডের টিকা নেওয়ার জন্য ইমার্জেন্সির গেট আটকে লাইন দিয়ে ছিলেন কয়েকশো রোগী ।

ভাঙড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু করোনা রোগীর, গাফিলতির অভিযোগ
ভাঙড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু করোনা রোগীর, গাফিলতির অভিযোগ

ভাঙড়, 27 এপ্রিল : সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট-সহ বেশ কিছু উপসর্গ নিয়ে ভুগছিলেন বছর ৩৫-এর গৃহবধূ পুষ্প মণ্ডল । তাঁর কোভিড পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে । এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি বাড়িতেই ছিলেন । কিন্তু সোমবার ভোর থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের লোকেরা তাড়দহ গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ভাঙড়-১ ব্লকের নলমুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন । টানা রোদে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে পার্কিং এরিয়াতেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ওই অ্যাম্বুল্যান্স । অভিযোগ, কোনও চিকিৎসক তাঁকে এসে দেখেননি । অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রাও দুর্ব্যবহার করেন করোনা আক্রান্তদের পরিবারের লোকেদের । এই ভাবে আধঘন্টা সময় কাটার পর চিকিৎসা শুরুর আগেই ওই রোগী মারা যান৷

মৃতার পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, কয়েকবছর আগে পুষ্প মণ্ডলের স্বামী মারা যান । তাঁর দুই ছেলে সুজন ও সঞ্জয় । বড় ছেলে সুজনের বয়েস 15 আর ছোট ছেলে সঞ্জয়ের বয়েস 10 । আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতা আর পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাতেন ওই মহিলা । সপ্তাহখানেক আগে করোনার উপসর্গ-সহ কাশি, জ্বর হয় তাঁর । অভাবের সংসারে প্রথম কয়েকদিন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি তিনি । পরে স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখালে তাঁর কোভিড পরীক্ষা করার কথা বলা হয় । সেখানেই তাঁর রিপোর্ট পজেটিভ আসায় বাড়িতে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন তিনি ।

পরিবারের দাবি, সোমবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বাড়লে সাড়ে 10টা নাগাদ সুজন মণ্ডল একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে মাকে নিয়ে নলমুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে । সেই সময় কোভিডের টিকা নেওয়ার জন্য ইমার্জেন্সির গেট আটকে লাইন দিয়ে ছিলেন কয়েকশো রোগী । তাঁরাই চিল চিৎকার করে প্রতিবাদ করেন করোনা রোগী নিয়ে এখান দিয়ে ঢোকা যাবে না । হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সিং স্টাফরা জানান, ইমার্জেন্সিতে এখন কোনও চিকিৎসক নেই । রোগীর করোনা টেস্টের কাগজপত্রও দেখতে চান নার্সরা । কিন্তু বাড়ির লোক প্রয়োজনীয় কাগজ দেখাতে পারেননি । এভাবেই আধঘণ্টা কেটে যায় এবং রোগীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি ।

ভাঙড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু করোনা রোগীর, গাফিলতির অভিযোগ

সুজনের অভিযোগ, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে যতটুকু অক্সিজেন ছিল, তা শেষ হয়ে যাওয়ায় মায়ের মৃত্যু হয়েছে । চিকিৎসকরা যদি একটু মাকে দেখতেন বা অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতেন তাহলে মা বেঁচে যেতেন । চিকিৎসার গাফিলতির জন্যই মায়ে মৃত্যু হয়েছে ।’’ পরিবারের দাবি উড়িয়ে ভাঙড়-১ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিমেষ হোড় বলেন, ‘‘নলমুড়ি কোভিড হাসাপাতাল নয় । এখানে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা করা হয় না । ওরা যদি ঠিকমতো কাগজ দেখাতেন, তাহলে সেফ হোম বা অন্যত্র পাঠাতাম ।’’

আরও পড়ুন :সামান্য নামল গ্রাফ ! সংক্রমিত আরও 3.23 লাখ, মৃত 2771

তাড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রাকেশ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘উনি করোনা আক্রান্ত হয়েও চিকিৎসা না করে বাড়িতে ছিলেন । হাসাপাতাল নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির মধ্যেই মারা যান । আরও আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো বেঁচে যেতেন ।’’

Last Updated : Apr 27, 2021, 3:02 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details