পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Jan 17, 2020, 11:14 PM IST

Updated : Jan 17, 2020, 11:27 PM IST

ETV Bharat / city

পুলিশি হেপাজতে থাকা ব্যক্তির মৃত্যু মালদায়, পিটিয়ে মারার অভিযোগ

পুলিশি হেপাজতে ছিলেন জৈনপুরের বাসিন্দা বাবলু শেখ । মাত্র 1 ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর মৃত্যু হয় । পুলিশকে মৃত্যুর জন্য দায়ি করছে মৃতের পরিবার ।

man-died-in-police-custody
পুলিশি হেপাজতে থাকা ব্যক্তির মৃত্যু মালদায়

মালদা, 17 জানুয়ারি : পুলিশি হেপাজতে এক ব্যক্তির মৃত্যু ৷ গতকাল গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচকের জৈনপুরে ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তিকে পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে ৷ এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে মৃতদেহ প্রথমে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় ৷ পরে পুলিশের গাড়িতেই মৃতদেহ স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় ৷

মৃত ব্যক্তির নাম বাবলু শেখ(55) ৷ পেশায় শ্রমিক ৷ কৃষিশ্রমিক হিসাবেও তিনি কাজ করতেন ৷ তাঁর 7 ছেলেমেয়ে ৷ 6 ছেলের সবাই শ্রমিক ৷ সবাই ভিনরাজ্যে কাজ করতে যায় ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাবলু শেখের বিরুদ্ধে NDPS আইনে পুরোনো মামলা ছিল ৷ কিন্তু এতদিন তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন ৷ গতরাতে ফের বাবলু শেখের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ ৷ তাঁকে নিজের বাড়ি থেকে ধরা হয় ৷ এরপর পুলিশকর্মীরা বাবলু শেখকে গাড়িতে তুলে বৈষ্ণবনগর থানায় নিয়ে যান ৷ সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবলু শেখ ৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায় ৷ পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে তৎক্ষণাৎ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় বেদরাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ পুলিশ বাবলু শেখকে কোনও মারধর করেনি ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে বাবলু শেখের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয় ৷

বাবলু শেখের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জৈনপুর গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয় ৷ গ্রামবাসীদের বক্তব্য, পুলিশ বাবলু শেখকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে ৷ বাবলু শেখের ছেলে আজিজ শেখ বলেন, “রাত 1টার দিকে পুলিশ আমাদের বাড়িতে যায় ৷ আমার ছোটো ভাই বাড়ির গেট খোলে ৷ আব্বাকে ঘুম থেকে ওঠানোর জন্য পুলিশ ভাইকে নির্দেশ দেয় ৷ ভাই আব্বাকে ঘুম থেকে ওঠায় ৷ তখনই তারা আব্বাকে গাড়িতে ওঠায় ৷ আম্মা পুলিশকে জিজ্ঞেস করে, কেন আব্বাকে গ্রেপ্তার করা হল ৷ কিন্তু পুলিশ কোনও উত্তর দেয়নি ৷ এছাড়া পুলিশ আমার নানা, কবির শেখকেও গ্রেপ্তার করে ৷ রাত 2টোর সময় পুলিশ ফের আব্বাকে ঘুরিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে ৷ আমাদের বলে, আসামির শরীর খারাপ হয়ে গেছে ৷ তখনই দেখি, আব্বার মৃত্যু হয়েছে ৷ আমাদের ধারণা, পুলিশ আব্বাকে মেরে ফেলেছে ৷ আমার আব্বা কোনওদিনই পোস্ত কিংবা গাঁজা চাষ করত না ৷ এর আগে আব্বার নামে কোনও অভিযোগ ছিল না ৷”

জৈনপুর গ্রামের বাসিন্দা, বাবলু শেখের এক আত্মীয় নিয়ামুল শেখ বলেন, “বাবলু শেখ আমাদের প্রতিবেশী ৷ গতকাল মাঝরাতে তাদের বাড়ি থেকে কান্নার আওয়াজে আমার ঘুম ভাঙে ৷ মামা অসুস্থ ছিল না ৷ মামার কোনও জমি জায়গা নেই ৷ শ্রমিকের কাজ করত ৷ মাদক কারবারে মামা কোনোদিনই জড়িত ছিল না ৷ আমাদের ধারণা, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ মামাকে মেরে ফেলেছে ৷ এনিয়ে এখনও থানায় কোনও অভিযোগ হয়েছে কিনা আমি বলতে পারব না ৷ তবে আমাদের পঞ্চায়েত প্রধান আশু মণ্ডল গ্রামেই ছিল ৷ সে এই বিষয়গুলি দেখছে ৷”

পুলিশি হেপাজতে থাকা ব্যক্তির মৃত্যু মালদায় । মৃতের ছেলে ও আত্মীয়ের বক্তব্য

বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখনও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি ৷ মৃতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হলে তা অবশ্যই গ্রহণ করা হবে ৷ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গাঁজা চাষ করার পুরোনো মামলা ছিল ৷ তার জন্য দীর্ঘদিন থেকে পুলিশ তাঁকে খুঁজছিল ৷ গতকাল রাতে তাকে ধরা হয় ৷ থানায় নিয়ে আসার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় পুলিশ ৷ দুর্ভাগ্যবশত তিনি মারা যান ৷

Last Updated : Jan 17, 2020, 11:27 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details