কলকাতা, 22 মে: ক্রমশ ভাঙছে ধৈর্যের বাঁধ । টানা 48 ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকায় কলকাতার একাধিক এলাকায় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। সমস্যায় পড়েছে গৃহস্থ পরিবারগুলি। এর জেরেই একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখান অনেকে । কোথাও কোথাও রাস্তা অবরোধও করা হয়। মানা হয়নি সামাজিক দূরত্বও। পরে পুলিশ এসে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে তাঁদের ঘরে ফেরানোর চেষ্টা করে।
আজ কলকাতায় প্রথম বিক্ষোভ হয় যাদবপুর এলাকায় । 100 নম্বর ওয়ার্ডে। এমনিতেই এই অঞ্চলে জলের সমস্যা রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কর্পোরেশনের জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ । অন্যদিকে যাঁদের বাড়িতে পাম্প রয়েছে তাঁরাও তা চালাতে পারছেন না। সব মিলিয়ে এলাকায় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। 103 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিঙ্কু নস্কর বলেন, “আমাদের এলাকায় এমনিতেই জলের কষ্ট রয়েছে। এর উপর এটা মূলত বস্তি এলাকা। কর্পোরেশনের জলের উপর সাধারণ মানুষ নির্ভরশীল। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো এখনও অনেক রাস্তায় জমে রয়েছে জল। আমরা কর্পোরেশনের জলের গাড়ি দিয়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাতে প্রয়োজন মিটছে না।" একই চিত্র বিজয়গর, শকুন্তলা পার্ক, পঞ্চসায়র, আনন্দপুর এলাকাতেও।
শুক্রবার বাঘাযতীন এলাকার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে। সেখানে সামাজিক দূরত্ব না মেনে দল বেঁধে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন অনেকে । এদিকে, দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর তাপমাত্রা বাড়ছে শহরে। বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণও যথেষ্ট বেশি। অথচ, বিদ্যুৎহীন এলাকা । গরমের কষ্টের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে ঘরে বিন্দুমাত্র জল না থাকা। অবস্থা এমন যে, স্নান কিংবা শৌচকর্ম নিয়েও ঘোরতর সমস্যা দেখা দিয়েছে । তার উপর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কলকাতার বড় অংশে । মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই। ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ অনেক এলাকাতেই। সঙ্গে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলে চার্জ দেওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় রাস্তায় নেমে পড়েছেন অনেকে ।
টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড এলাকার বাসিন্দা পিনাকী দত্ত বলেন, “এভাবে বাঁচা সম্ভব ? পানীয় জলের কথা ছেড়ে দিন, বাসন ধোয়া কিংবা বাথরুম ব্যবহারের জলটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না। মানছি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু দ্রুত ব্যবস্থা নিক সরকার। পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠেছে।"
এদিকে, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মেনে নিয়ে পুলিশের তরফে অনুরোধ, "যত দ্রুত সম্ভব শহর স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বিক্ষোভ, অবরোধ করবেন না। কারণ বিক্ষোভ সামাল দিতেও পুলিশের কিছু কর্মী ব্যস্ত হচ্ছেন। সেই সময়টুকুতে আরও একটা গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করলে সমস্যার প্রকৃত সমাধান হবে।"