হায়দরাবাদ: যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন ৷ কখন কোথায় রাশিয়া আক্রমণ করবে, তা জানা নেই। তাই পোল্যান্ড থেকে বিশেষ ট্রেনে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুধু তিনি নয়, তাঁর আগে যুদ্ধবিদ্ধস্ত এই দেশে নিরাপদ সফরের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রেনকেই বেছে নিয়েছিলেন । ইউক্রেন 1991 সালে স্বাধীন হয়। তারপর এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনে গেলেন ৷
Highlights from a very special visit to Ukraine, a valued friend of India’s. pic.twitter.com/0LuQ6vm5Iw
— Narendra Modi (@narendramodi) August 23, 2024
2022 সালের 24 ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনের উপর সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেন। তারপর থেকে যুদ্ধ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে পৌঁছতে দেশের বিমানবন্দর মোটেও সুরক্ষিত নয় এবং যুদ্ধ শুরুর পর তা বন্ধ করা হয়েছে। তাই অন্যান্য রাষ্ট্রনেতাদের মতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 20 ঘণ্টা ট্রেনে চেপে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে পৌঁছেছেন শুক্রবার (ভারতীয় সময় 23 অগস্ট) ৷ এটি কোনও ট্রেনটি কোনও সাধারণ ট্রেন নয়। বিলাসবহুল সুবিধা এবং বিশ্বমানের পরিষেবার জন্য পরিচিত । এই বিশেষ ট্রেনের নাম 'ট্রেন ফোর্স ওয়ান'। এটি উল্লেখযোগ্য প্রধানমন্ত্রী মোদি ইউক্রেনের রাজধানী কিভে 7 ঘণ্টা ছিলেন ৷
ট্রেন ফোর্স ওয়ানে বিশেষত্ব কী: এই ট্রেনটি 2014 সালে চালু হয় পর্যটনের জন্য ৷ তবে বর্তমানে এটি রাষ্ট্র নেতাদের ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইউক্রেন ভ্রমণকারী বেশিরভাগ নেতা, সাংবাদিক এবং কূটনীতিকরা রেল ফোর্স ওয়ানে সফর করেন এখন ।
ট্রেনটির বৈশিষ্ট্য কী: ইউক্রেনের 'রেল ফোর্স ওয়ান' একটি বিলাসবহুল ট্রেন, যেটি কেবল রাতে চলে। এই ট্রেনের গতি অত্যন্ত ধীর ৷ পোল্যান্ড থেকে কিভ পর্যন্ত 600 কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে 10 ঘন্টা সময় লাগে। এই রেল ফোর্স ওয়ান ক্রিমিয়াতে পর্যটনের প্রচারের জন্য চালু করা হয়েছিল। রাশিয়ার ক্রিমিয়া অধিগ্রহণের পর, এই ট্রেনটি বিশিষ্ট বিশ্বনেতা এবং ভিআইপি অতিথিদের সফরের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
ট্রেনের ভিতরটি অত্যন্ত বিলাসবহুল এবং অত্যাধুনিক। এই ট্রেনটি দেখতে অনেকটা বিলাসবহুল হোটেলের মতো ৷ সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ মিটিং-এর জন্য এটি ব্যবহার করা হয় ৷ ট্রেনের মধ্যে বৈঠকের জন্য রয়েছে বড় টেবিল, দেওয়ালে একটি বিলাসবহুল সোফা ও টিভি । ঘুম ও বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ট্রেনে ভিআইপি যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে উন্নতমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সম্পূর্ণরূপে বুলেটপ্রুফ: সাঁজোয়া জানালা থেকে সুরক্ষিত যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে এই ট্রেনে ৷ রেল ফোর্স ওয়ান ট্রেনটির সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ট্রেনের নজরদারি ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সুরক্ষিত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং নিরাপত্তা কর্মীও রাখা হয়েছে ৷
বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদও এই ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ এবং তৎকালীন ইতালির প্রধানমন্ত্রী এই ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন।