কলকাতা, 30 জুন: দেশে এক বছরে 641টি নতুন প্রাণী প্রজাতির হদিশ মিলেছে। আর রবিবার পর্যন্ত দেশে 1 লক্ষ 4 হাজার 561টি প্রজাতির প্রাণী পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। সেই সমস্ত প্রাণীর বিস্তারিত বিবরণ-সহ আবিষ্কার কর্তার নাম ও তথ্য দিয়ে পোর্টাল চালু হল এদিন ৷ বিশ্বে প্রথম কোনও দেশ এমন তালিকা প্রস্তুত করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
এদিন কলকাতার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (জেডএসাই)-র 109 তম প্রতিষ্ঠা দিবস এবং দ্বিতীয় অ্যানিমাল ট্যাক্সোনমি সামিটের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব ৷ এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল 'ফনা অফ ইন্ডিয়া চেকলিস্ট পোর্টাল'র উদ্বোধন ৷
প্রাণীবিজ্ঞান গবেষণায় এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থেকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সারা বিশ্বে ভারতই প্রথম যারা দেশে উপস্থিত সব ধরনের প্রাণীর বিভিন্ন প্রজাতির তথ্য নথিভুক্ত করছে এই পোর্টালে ৷ যা সমগ্র বিশ্বেই অভিনব উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। এই পোর্টালে প্রতিটি প্রজাতির নাম, ছবি ও প্রাপ্তিস্থানেরও উল্লেখ রয়েছে ৷ এই পোর্টালে 121টি চেকলিস্টে 104, 561টি প্রজাতির উল্লেখ রয়েছে ৷
এদিন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী বলেন, "প্রকৃতিকে ভালো না বাসলে এবং প্রকৃতির প্রতি যথাযথ মনোযোগ না দিলে অচিরেই জীবজগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে ৷ একটা সময় যদি দেখা যায় সমগ্র প্রাণীকূল, পশু, পাখি, উদ্ভিদ, মাছ সব শেষ হয়ে গিয়ে শুধুই মানুষ আর মানুষ রয়েছে, তখন অবস্থাটা কী হবে ভেবে দেখেছেন ?"
এদিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে ৷ 'একটি গাছ মায়ের নামে' শীর্ষক প্রচারের অঙ্গ হিসেবে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে শিশুরা ছাতিম ও চাঁপা গাছের চারা রোপণ করে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'মন কি বাত' অনুষ্ঠান প্রেক্ষাগৃহে সরাসরি সম্প্রচারিতও হয় ৷ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ঐতিহাসিক 'অ্যানিমাল ডিসকভারি 2023'-এর প্রকাশ করেন ৷
এই প্রকাশনায় বিগত বছরে ভারতে আবিষ্কৃত 641টি নতুন প্রাণী প্রজাতির উল্লেখ রয়েছে ৷ সেই সঙ্গে বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রকাশিত 'প্ল্যান্ট ডিসকভারিজ 2013' গ্রন্থে 339 নতুন উদ্ভাবিত উদ্ভিদ প্রজাতির উল্লেখ রয়েছে ৷ এছাড়াও অনুষ্ঠানে "ফনা অফ ইন্ডিয়া-109 বারকোডস", "ক্যাটালগ অফ হোবারফ্লাইস", "ক্যাটালগ অফ মুস্যিড", "ফ্লোরা অফ ইন্ডিয়া সিরিজ"-সহ বেশ কিছু প্রকাশনারও উন্মোচন করেন মন্ত্রী ৷
গবেষণার বিস্তৃতির লক্ষ্যে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রহ্মপুর বিশ্ববিদ্যালয়, মাদুরাই কামরাজ বিশ্ববিদ্যালয়, হিমালয় বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার সঙ্গে মোট 10টি চুক্তি এদিন স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী দ্বিতীয় বর্ষ অ্যানিমাল ট্যাক্সোনমি সামিটের উদ্বোধন করেন। এই বছর তিন দিনের সম্মেলনে প্রাণীর প্রজাতিগত শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে 350 জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। জীববৈচিত্র সংরক্ষণে এই সম্মেলন ভারত সরকার ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্মাণে সহায়তা করবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন ৷