বাঁকুড়া, 15 জুলাই: কৃষ্ণ মানেই মন মোহিত করা বাঁশির সুর ৷ সেই সুরের জাদুতে মুগ্ধ হয়ে যেত কতশত সখীগণ ৷ কৃষ্ণের বাঁশিকে ঘিরে শোনা যায় এমনই নানা ঘটনার কথা ৷ সে রকমই শ্রীকৃষ্ণের জীবনের বেশ কিছু অংশ এবার বাঁশির গায়ে খোদাই করলেন বাঁকুড়ার শুশুনিয়ার শিল্পী 28 বছরের অভীক কর্মকার ৷ তবে এই বাঁশি কাঠের নয়, তৈরি করা হয়েছে পাথর কেটে ৷ বাঁশির গায়ে খোদাই করা রয়েছে অপূর্ব সব কারুকার্য । কাঠের তৈরি বাঁশির মতই সুন্দর সুর তোলা যায় পাথরের এই বাঁশিতেও ।
এই বিষয়ে পাথর শিল্পী অভীক কর্মকার বলেন, "বাঁশি মানেই তো কৃষ্ণ । সেই কারণেই কংস বধ থেকে শুরু করে শ্রীকৃষ্ণের অবতার রূপ ফুটিয়ে তুলেছি আমি এই পাথরের বাঁশির গায়ে । প্রথমবার এরকম পাথর কেটে বাঁশি তৈরি করলাম আমি ৷ খুব ভালো লাগছে আমার বাঁশিটি সকলে পছন্দ করছে ৷"
ছোট থেকে বাবার কাছে কাজ শেখা অভীকের ৷ এরপর নতুন কিছু করার ভাবনা থেকেই তাঁর এই পাথরের বাঁশি তৈরি ৷ পাথরের মধ্যেও যে বাঁশির সুর আনা সম্ভব সেটাই ভাবতে পারেননি শিল্পী নিজেই । এক প্রকার পরীক্ষামূলকভাবে বাঁশিটি তৈরি করার পর তিনি বুঝতে পারেন যে এই বাঁশি বাজিয়ে তোলা যায় সুরের মূর্ছনা । পাথরের তৈরি হলেও ওজনে বেশ হালকা এই বাঁশিটি ।
পাথর শিল্পী অভীক কর্মকারের প্রায় 210 দিন লেগেছে বাঁশিটি তৈরি করতে ৷ ধৈর্যের সঙ্গে পাথর খোদাই করে তিনি বানিয়েছেন এই বাঁশিটি । রূপোলি রঙের বাঁশির কারুকার্য মন কাড়বে যে কোনও মানুষের ৷ তাই তো বাঁশিটিকে বিক্রির ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন শিল্পী ৷ যদি কেউ বাঁশিটি কিনতে চান তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ৷ 90 হাজার টাকা মতো আপাতত বাঁশিটির দাম রেখেছেন অভীক ৷ পরে যদি এই রকম বাঁশির চাহিদা থাকে তাহলে তিনি আরও বানাতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন ৷
2023-2024 সালে হওয়া ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগ অধিকার পশ্চিমবঙ্গ কারুশিল্প প্রতিযোগিতায় এই পাথরের বাঁশির জন্য প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বাঁকুড়ার এই শিল্পী ৷ এছাড়াও অভীক কর্মকার এই বাঁশির জন্য রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায়ও পেয়েছেন প্রথম পুরস্কার । বাঁকুড়ার শুশুনিয়ায় ঘুরতে গিয়ে দেখে আসতে পারেন পাথরের অপূর্ব সুন্দর বাঁশিটি ৷ এই পাথর শিল্পীর তৈরি করা আশ্চর্য বাঁশিটি দেখে অবাক হবেন আপনিও। বাঁশির গায়ে খোদাই করা রয়েছে শ্রী কৃষ্ণের জীবনের বেশ কিছু কাহিনী।