বারাসত, 5 সেপ্টেম্বর: রাত দখলের কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে মহিলাকে কটুক্তির অভিযোগ ৷ উঠেছে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির অভিযোগও ৷ প্রতিবাদ করতে গিয়ে মদ্যপ ব্যাক্তির হাতে আক্রান্ত হতে হল নির্যাতিতার ছেলেকে ৷
ঘটনার জেরে বুধবার রাতে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় উত্তর 24 পরগনার বারাসতে ৷ ঘটনার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয় মানুষজন ৷ মদ্যপ ব্যাক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ রাতেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত যুবক ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে ৷ গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ৷ তবে, রাতের শহরে বারাসতে মহিলাদের সুরক্ষা যে কতটা ঠুনকো, তা এই ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠে গেল !
14 অগস্টের পর 4 সেপ্টেম্বর ৷ নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে বুধবার ফের রাত দখলের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল রাজ্যজুড়ে ৷ জেলাসদর বারাসতে সেই কর্মসূচির মূল জমায়েতের স্থান ছিল ডাকবাংলো মোড় ৷ ফলে, রাত হতেই নাগরিক সমাজের একের পর এক প্রতিবাদ মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে সেখানে ৷ মানুষের ভিড় আর সুবিচারের জোরালো গর্জনে একসময় মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা ডাকবাংলো মোড় চত্বর। সকলের মুখে ঘুরেফিরে একটাই স্লোগান, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' ! প্রতিবাদের সুর যখন সপ্তমে, ঠিক তখনই ঘটে মহিলাকে কটুক্তি করার ঘটনাটি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ডাকবাংলো মোড়ের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পর রাতে ফিরছিলেন মাঝবয়সি ওই মহিলা ৷ তাঁর বাড়ি বারাসতের লঙ্কাবাগানে ৷ মহিলার সঙ্গে ছিলেন তাঁর বোনও ৷ যিনি বাদুড়িয়া থেকে বারাসতে এসেছিলেন রাত দখলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে ৷ দিদি-বোন, দু'জনে পায়ে হেঁটে কিছু দূর এগোতেই যশোর রোডের পাশে মদের আসর থেকে এক ব্যাক্তি তাঁদের উদ্দেশ্য কটুক্তি করে বলে অভিযোগ।
সেই দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করেন মহিলার ছেলে ৷ তখন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে মদ্যপ ব্যাক্তি ৷ অভিযোগ, তাঁর সামনেই চলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি।এরপর, তিনি যখন মা ও মাসিকে নিয়ে বাইকে উঠতে যাবেন, তখন হঠাৎই পিছন থেকে এসে মদ্যপ ওই ব্যাক্তি চড়াও হন তাঁর উপর। মারধর করা হয় যুবককে ৷ এমনকি, গায়ের জামাও সে টেনে ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এরপরই, এলাকার লোকজন হাতেনাতে ধরে ফেলে তাকে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ৷ পুলিশের সামনেই মদ্যপ ব্যাক্তির কুকীর্তি নিয়ে সরব হন আক্রান্ত যুবক।
এই বিষয়ে আক্রান্ত যুবক সোহম মজুমদার বলেন,"সারা রাজ্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে ৷ তার মধ্যে এই ঘটনা ভাবাই যায় না ! দুর্বৃত্তদের এত সাহস হয় কীভাবে ? পুলিশ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক, আমরা সেটাই চাই।"
এদিকে, জনতার হাত থেকে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে রক্ষা করতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তড়িঘড়ি তাকে বের করে নিয়ে চলে যায় ৷ যা ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে ৷ প্রতিবাদ কর্মসূচির পাশে কিংবা যশোর রোডের দু'ধারে কেন পুলিশের গাড়ি মোতায়েন করা ছিল না,তা নিয়েও রীতিমতো উঠেছে প্রশ্ন!