কলকাতা, 31 মার্চ: গার্ডেনরিচের পর এবার বিরাটি ৷ ফের সংবাদ শিরোনামে বাড়ি ভেঙে মৃত্যুর খবর ৷ নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে মৃত্যু হল এক মহিলার ৷ শনিবার রাত 8টার সময় নিজের বাড়ির সামনে হাঁটাচলা করার সময় আচমকা নির্মীয়মাণ বাড়ির গার্ডওয়াল ভেঙে পড়ে ৷ মৃত্যু হয় কেয়া শর্মা চৌধুরীর (56) ৷ এই ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে কাউন্সিলরের অফিস ৷ সেখান থেকে এই নির্মীয়মাণ বাড়ি কাজ দেখা যায় বলেই জানিয়েছে এলাকাবাসী ৷ এদিকে রবিবার সকালে চেতলায় একটি পুরনো বাড়ির কার্নিসের একটা অংশ ভেঙে পড়ে ৷ যদিও কোনও হতাহতের খবর মেলেনি ৷ এতে এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৷ এই ঘটনায় 6 জনকে পুলিশ আটক করেছিল ৷ তাদের মধ্যে 2জনকে ছেড়ে দিলেও বাকি 4জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ ৷
স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত আটটা নাগাদ বাড়ির সামনের উঠোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন কেয়া দেবী ৷ সেই সময় ঠিক তাঁর পাশে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের ছ'তলার পাঁচিল খসে পড়ে ৷ তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলেই ওই মহিলার মৃত্যু হয় ৷
মৃতের স্বামীর অভিযোগ, কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই বাড়িটি নির্মাণ করা হচ্ছিল ৷ 8-10 ফুটের সরু রাস্তা, তার পাশেই চারতলা বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ৷ তিনি বলেন, "এতবার বলেছি, সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করো ৷ এর আগে জেসিবি মেশিন দিয়ে কাজ করার সময় ধস নামে ৷ কাউন্সিলরের অফিস কাছে ৷ তাঁর অফিস থেকেই সব কাজ দেখা যায় ৷ কাউন্সিলর নিশ্চয় জানেন ৷ এর একটা বিচার হোক"৷ সেই নির্মীয়মাণ বাড়িরই একাংশ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীর ৷ তিনি এই বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "আমার বাড়ি ভেঙেচুরে দিয়ে কাজ করছে ৷"
এদিকে পুলিশ সূত্রের খবর, কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ বাড়িটি আদৌ অবৈধভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে কি না, তার তদন্ত চলছে ৷ যদি প্রমাণিত হয় এক্ষেত্রে অবৈধ নির্মাণ জড়িত, তাহলে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে ৷
এদিকে এই ঘটনার পর স্থানীয় উত্তর দমদম পৌরসভার 17 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহুয়া শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ার কথা বলা হয়েছে ৷ এই ঘটনা সত্যি নয় ৷ বাড়ির একাংশ নয়, ইট খসে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার ৷ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় 18 জনকে আটক করেছে পুলিশ ৷ তারা সবাই ওই সাইটে কাজ করছিল ৷ যে প্রমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাঁকেও ডাকা হয়েছে ৷ এদিকে ঘটনার পর ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পৌঁছে গিয়েছিলেন উত্তর দমদম পৌরসভার চেয়ারম্যান ৷ অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: