ETV Bharat / state

কোনও বাগানে নেই মালিক, কোথাও আবার সময়ে মজুরি মেলে না ! চরম দুরবস্থা চা-শ্রমিকদের - TEA WORKERS IN DIRE STRAITS

জলপাইগুড়ির বেশ কয়েকটি চা-বাগানে শ্রমিকদের করুণ পরিস্থিতি ৷ কোনও বাগানে মালিকপক্ষই নেই ৷ কোথাও আবার সময়ে মজুরি পাওয়া যায় না ৷

ETV BHARAT
চরম দুরবস্থা চা-শ্রমিকদের (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 3, 2025, 6:46 PM IST

জলপাইগুড়ি, 3 জানুয়ারি: কোনও চা-বাগানে মালিকপক্ষ নেই ৷ কোথাও আবার মালিকপক্ষ থাকলেও সময়মতো মজুরি মেলে না । চরম দুরবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন জেলার বেশ কয়েকটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা । সংসার চালানোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে রায়পুর, কিলকট, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট-সহ বিভিন্ন চা-বাগানের শ্রমিকদের ৷ তাঁদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন ৷

বর্তমানে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের রায়পুর চা-বাগানের শ্রমিকরা অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছেন । প্রায় 700 শ্রমিকের কোনও স্থায়ী কাজ নেই । মাত্র 150 টাকা মজুরিতে চা-পাতা তোলার কাজ করে তাঁরা দিন কাটাচ্ছেন । দ্রুত বাগানের পুরনো লিজ বাতিল করে নতুন মালিককে দিয়ে বাগান খোলার দাবি জানাচ্ছেন চা-শ্রমিকরা ।

ETV BHARAT
চা-পাতা তুলে সংসার চালানোই কঠিন (নিজস্ব চিত্র)

রায়পুর চা-বাগান 2012 সালে সংবাদের শিরোনামে এসেছিল মৃত্যুমিছিলকে কেন্দ্র করে । 2014 সালে বাগানটি একটি নতুন মালিকের হাতে খোলা হলেও গত বছর মালিকপক্ষ বিনা নোটিশে বাগান ছেড়ে চলে যায় । এরপর 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বাগানের কাজ এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায় । চা-বাগানে শ্রমিকরা মালিকহীন অবস্থায় রয়েছেন ।

রায়পুর চা-বাগানের শ্রমিক তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান, প্রধান হেমব্রম বলেন, "প্রশাসন আমাদের শুধু আশ্বাস দিচ্ছে যে, বাগান খোলা হবে ৷ কিন্তু বাগান খুলছে না ৷ আমরা চাই প্রশাসন অবিলম্বে বাগান খুলুক, নাহলে বাগান শ্রমিকরা এর থেকেও বড় আন্দলনে নামতে বাধ্য হবে । গত বছর থেকে আমরা অসহায় অবস্থায় রয়েছি । কোনও রকমে বাগানের পাতা তুলে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা । এখন চা-পাতা তোলা বন্ধ, ফলে শ্রমিকরা সবাই কাজও পাচ্ছেন না ।"

ETV BHARAT
করুণ পরিস্থিতি চা-বাগানের শ্রমিকদের (নিজস্ব চিত্র)

অন্যদিকে, মালবাজার মহকুমার কিলকট, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট চা-বাগানে অনিয়মিত মজুরি হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন চা-শ্রমিকরা । এই চা-বাগানগুলির কয়েক হাজার শ্রমিক নিয়মিত মজুরি না-পেয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন ।

নাগেশ্বরী চা-বাগানের শ্রমিক কৃশানু নাগাশি বলেন, "আমরা চাই আমাদের চা-বাগানের মজুরি সঠিক সময়ে হোক । আমরা ভালো ভাবে থাকি । দীর্ঘদিন চা-বাগানে অচলাবস্থা থাকার পরও বাগান চলছে । কিন্তু মাঝেমধ্যেই কিলকট, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট চা-বাগানে মজুরি নিয়ে টালবাহানা চলছে । ফলে আমরা সমস্যায় পড়েছি ।"

ETV BHARAT
কোনও চা-বাগানে মালিকপক্ষই নেই (নিজস্ব চিত্র)

বাগরাকোট, কিলকট চা-বাগানে অনিয়মিত মজুরির ফলে মাঝেমধ্যেই বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা ৷ গত ডিসেম্বর মাসেই বেশ কয়েকবার মজুরির দাবিতে বাগরাকোট বাগানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন চা-শ্রমিকরা । শ্রমিক নেতা খেরসেন খড়িয়ায় দাবি, "আমরা চা-বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি ঠিকমতো দেওয়ার দাবি জানালেও সমস্যার সমাধান হয়নি । শ্রমিকরা ঠিকমতো মজুরি না-পাওয়ায় তাঁদের পরিবারকে প্রতিপালন করতে পারছেন না । মজুরি না-পেলে শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, টিউশন পড়ানো খুবই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ।"

এই চা-বাগান শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে তারা সচেষ্ট বলে জানিয়েছে প্রশাসন ৷ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন জানিয়েছেন, চা-শ্রমিকদের এই সমস্যার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে ।

জলপাইগুড়ি, 3 জানুয়ারি: কোনও চা-বাগানে মালিকপক্ষ নেই ৷ কোথাও আবার মালিকপক্ষ থাকলেও সময়মতো মজুরি মেলে না । চরম দুরবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন জেলার বেশ কয়েকটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা । সংসার চালানোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে রায়পুর, কিলকট, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট-সহ বিভিন্ন চা-বাগানের শ্রমিকদের ৷ তাঁদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন ৷

বর্তমানে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের রায়পুর চা-বাগানের শ্রমিকরা অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছেন । প্রায় 700 শ্রমিকের কোনও স্থায়ী কাজ নেই । মাত্র 150 টাকা মজুরিতে চা-পাতা তোলার কাজ করে তাঁরা দিন কাটাচ্ছেন । দ্রুত বাগানের পুরনো লিজ বাতিল করে নতুন মালিককে দিয়ে বাগান খোলার দাবি জানাচ্ছেন চা-শ্রমিকরা ।

ETV BHARAT
চা-পাতা তুলে সংসার চালানোই কঠিন (নিজস্ব চিত্র)

রায়পুর চা-বাগান 2012 সালে সংবাদের শিরোনামে এসেছিল মৃত্যুমিছিলকে কেন্দ্র করে । 2014 সালে বাগানটি একটি নতুন মালিকের হাতে খোলা হলেও গত বছর মালিকপক্ষ বিনা নোটিশে বাগান ছেড়ে চলে যায় । এরপর 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বাগানের কাজ এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায় । চা-বাগানে শ্রমিকরা মালিকহীন অবস্থায় রয়েছেন ।

রায়পুর চা-বাগানের শ্রমিক তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান, প্রধান হেমব্রম বলেন, "প্রশাসন আমাদের শুধু আশ্বাস দিচ্ছে যে, বাগান খোলা হবে ৷ কিন্তু বাগান খুলছে না ৷ আমরা চাই প্রশাসন অবিলম্বে বাগান খুলুক, নাহলে বাগান শ্রমিকরা এর থেকেও বড় আন্দলনে নামতে বাধ্য হবে । গত বছর থেকে আমরা অসহায় অবস্থায় রয়েছি । কোনও রকমে বাগানের পাতা তুলে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা । এখন চা-পাতা তোলা বন্ধ, ফলে শ্রমিকরা সবাই কাজও পাচ্ছেন না ।"

ETV BHARAT
করুণ পরিস্থিতি চা-বাগানের শ্রমিকদের (নিজস্ব চিত্র)

অন্যদিকে, মালবাজার মহকুমার কিলকট, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট চা-বাগানে অনিয়মিত মজুরি হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন চা-শ্রমিকরা । এই চা-বাগানগুলির কয়েক হাজার শ্রমিক নিয়মিত মজুরি না-পেয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন ।

নাগেশ্বরী চা-বাগানের শ্রমিক কৃশানু নাগাশি বলেন, "আমরা চাই আমাদের চা-বাগানের মজুরি সঠিক সময়ে হোক । আমরা ভালো ভাবে থাকি । দীর্ঘদিন চা-বাগানে অচলাবস্থা থাকার পরও বাগান চলছে । কিন্তু মাঝেমধ্যেই কিলকট, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট চা-বাগানে মজুরি নিয়ে টালবাহানা চলছে । ফলে আমরা সমস্যায় পড়েছি ।"

ETV BHARAT
কোনও চা-বাগানে মালিকপক্ষই নেই (নিজস্ব চিত্র)

বাগরাকোট, কিলকট চা-বাগানে অনিয়মিত মজুরির ফলে মাঝেমধ্যেই বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা ৷ গত ডিসেম্বর মাসেই বেশ কয়েকবার মজুরির দাবিতে বাগরাকোট বাগানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন চা-শ্রমিকরা । শ্রমিক নেতা খেরসেন খড়িয়ায় দাবি, "আমরা চা-বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি ঠিকমতো দেওয়ার দাবি জানালেও সমস্যার সমাধান হয়নি । শ্রমিকরা ঠিকমতো মজুরি না-পাওয়ায় তাঁদের পরিবারকে প্রতিপালন করতে পারছেন না । মজুরি না-পেলে শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, টিউশন পড়ানো খুবই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ।"

এই চা-বাগান শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে তারা সচেষ্ট বলে জানিয়েছে প্রশাসন ৷ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন জানিয়েছেন, চা-শ্রমিকদের এই সমস্যার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.