কলকাতা, 2 মে: লোকসভা ভোটের আগে বেনজির ঘটনা বাংলায় ৷ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লিলতাহানির অভিযোগ এক অস্থায়ী কর্মীর ৷ ইতিমধ্যেই হেয়ারস্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ৷ অন্যদিকে, রাজ্যের অন্য বড় ঘটনা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় ৷
এদিন কলকাতা ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শশী পাঁজা বলেন, "রাজ্যপালকে আর মহামান্য বলতে পারব কি না সেই প্রশ্ন উঠছে। তিনি এতদিন বড় বড় জ্ঞান দিতেন। সন্দেশখালিতে যেতেন। নারী নির্যাতনের ঘটনায় সমবেদনা জানাতেন। নারী সম্মানের কথা বলতেন। ওয়ার রুম থেকে শুরু করে পিস রুম হওয়া উচিত বলে দাবি করতেন। তাঁর বিরুদ্ধেই রাজভবনের অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে বড় ঘটনা এই অভিযোগ প্রথমবার নয় ৷ অনেকবার এই ঘটনা ঘটেছে ৷ আজ সাহস জোগাড় করে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা স্তম্ভিত। কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালদের মনোনীত করেন। তাঁদের মূল লক্ষ্য থাকে রাজ্যপালের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার গুলিকে বিরক্ত করা। এদিন প্রধানমন্ত্রীও রাজভবনে রাত্রি বাস করবেন। আমরা অপেক্ষায় রইলাম তিনি কী বলেন তা জানার জন্য। প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি নেতারা কি এর নিন্দা করবেন ?"
অন্যদিকে, তিন রাজ্যের দায়িত্ব সামলানো প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেন, "যাঁরা এই ধরনের শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন তাঁরা তো শুধু একজন মহিলার সঙ্গে করেন না, তাহলে এই নিয়ে আরও অভিযোগ থাকত ৷ তার ফলে যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁদের সুনাম রটে যায় ৷ সিভি আনন্দ বোসকে বহুদিন ধরে আমি চিনি ৷ তিনি মেঘালয়ে পরামর্শদাতা হিসাবে ছিলেন ৷ মেঘালয়ের যখন রাজ্যপাল ছিলাম তখন চিনতাম ৷ কস্মিনকালে শুনেনি, ওঁর নামে এই রকম কোনও বদনাম রয়েছে ৷ উনি খামখেয়ালি, উলটো-পালটা নির্দেশ দেন ইত্যাদি অভিযোগ উঠেছে ৷ কিন্তু মহিলাদের শ্লীলতাহানি করেন এমনটা শুনিনি ৷ সেই জন্য আমার বিশ্বাস রাজ্যজুড়ে যে দুর্নীতি চলছে সেগুলো থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা ৷ যখন কারও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন এই ধরনের কুৎসা রটানোর চেষ্টা করে ৷"
এই ঘটনায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কী কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে পুলিশ বা প্রশাসন? প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেন, "পুলিশ বা প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নিতে পারে না ৷ সংবিধানের 361 নম্বর অনুচ্ছেদে রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির নামে কোনও ফৌজদারি নালিশ করা যায় না ৷" উল্লেখ্য, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল সোশাল মিডিয়ায় নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ৷ তিনি লিখেছেন, সত্যের জয় হবেই ৷ কেউ যদি মনে করে আমায় কলুষিত করে নির্বাচনী সুবিধা পাবে তাহলে ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাস চলছে তার বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলছে।" এখন দেখার লোকসভার ভোটের আবহে এই ঘটনার জল কতদূর গড়ায় ৷
আরও পড়ুন
1. রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ! 'সত্যের জয় হবেই', দাবি আনন্দ বোসের
2. শাস্তি দিয়েছে দল, কুণালের পাশে দাঁড়ালেন ব্রাত্য়-শান্তনু
3. তৃতীয় চতুর্থ দফার ভোট নিয়ে বৈঠকে মুর্শিদাবাদ নিয়ে উদ্বেগ কাটল না কমিশনের