কলকাতা, 24 এপ্রিল: প্রথম দফার নির্বাচনের সময় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে একশো শতাংশ বুথেই ওয়েবকাস্টিং করার কথা জানানো হয়েছিল ৷ তবে সূত্রের খবর, প্রথম পর্বের নির্বাচনের পর 98 শতাংশ বুথে ওয়েব কাস্টিং করা হয়, যা ধরিয়ে দিয়েছে প্রথম দফার এক বুথের কারচুপি।
লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে সবরকম কারচুপি রুখতে প্রথম থেকেই বদ্ধপরিকর কমিশন। আর এই ব্যবস্থাকে আর পাকাপোক্ত করতে 100 শতাংশ বুথেই ওয়েব কাস্টিং করা হবে বলে জানানো হয় ৷ আর যে বুথে ওয়েব কাস্টিং সম্ভব নয়, সেখানে সিসিটিভির মাধ্যমে পুরো ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া রেকর্ড করার কথা জানানো হয়। প্রথমবার ওয়েব কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে এআই (AI) ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রথমবার বলেই ট্রায়াল এন্ড এরর (Trial and Error)-এর মাধ্যমে যে যে সমস্যাগুলি সামনে আসছে সেগুলিকে অতিক্রম করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। যেহেতু প্রথম দফায় বেশিরভাগ বুথে নজর রাখা গিয়েছে ফলে কোথাও কোনও সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন ৷ আবার বুথ সংক্রান্ত কোথাও অভিযোগ জমা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ওয়েব কাস্টিং-এর মাধ্যমে সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে নেওয়াও সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে ওয়েব কাস্টিংয়ে ধরা পড়েছে একটি বুথে চলতে থাকা কারচুপির বিষয়। প্রথম দফায় যত অভিযোগ জমা পড়েছিল তার সিংহভাগই ছিল কোচবিহার থেকে। তবে জলপাইগুড়ির লোকসভার অন্তর্গত ধূপগুড়ি কেন্দ্রে হঠাৎ করেই কন্ট্রোল রুমে দেখা যায় যে, প্রিসাইডিং অফিসার ভোটারের কানে কানে কিছু বলে দিচ্ছেন। এরপরেই সেই প্রিসাইডিং অফিসারকে শো কজ করা হয়েছে। বুথে সিসিটিভি থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনও পরোয়া না করেই এই ধরনের কার্যকলাপ করেন বলে অভিযোগ ওঠে ৷ তারপরেই ব্যবস্থা নেয় নির্বাচন কমিশন ৷
তবে ওয়েব কাস্টিং-এর যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনই রয়েছে বেশ কিছু অসুবিধাও ৷ ওয়েব কাস্টিং-এ এআই থাকার ফলে যদি কোনও বুথে গরমিল দেখা দেয়, সেই ক্ষেত্রে একটি অ্যালার্ম বেজে উঠবে । যতক্ষণ না ওই বুথে কুইক রেসপন্স টিম পৌঁছচ্ছে ততক্ষন অ্যালার্ম স্নুজ বা নির্দিষ্ট সময় পর পর বেজে ওঠে। এমনকি ওয়েব কাস্টিং ইন্সটল করার সময় আওয়াজের যেই ডেসিবেল সেট করা ছিল সেই ডেসিবেলের বেশি যদি আওয়াজ হয় সে ক্ষেত্রে ফের অ্যালার্ম বেজে উঠবে। যদি কোথাও কোনও বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, সেই ক্ষেত্রে অ্যালার্ম বেজে উঠবে। আর মূল সমস্যাটা এখানেই ৷ যদি কোনও বাক বিতণ্ডা না-ও হয়, অন্য কোনও কারণে বুথে জোরে শব্দ হলেই বেজে উঠছে অ্যালার্ম ! অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে বুথে হয়তো সবকিছুই ঠিকঠাক ভাবে এগোচ্ছে তবুও অ্যালার্ম বেজে উঠছে। আবার কোনও বুথে যদি দশ জনের বেশি ভোটার ঢুকে পড়েন তাহলেও বেজে উঠছে অ্যালার্ম।
'অ্যালার্ম আতঙ্ক' কাটিয়ে সমস্যার সমাধানে কমিশনের পক্ষ থেকে ওয়েব কাস্টিং-এ বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্ব থেকে এই পরিবর্তনগুলি কার্যকরী হবে। যেমন, নির্দিষ্ট কোনও সমস্যায় একবার অ্যালার্ম বাজলে সেই একই কারণে দ্বিতীয়বার এলার্ম বেজে ওঠার সময়ের ব্যবধান বাড়ানো হবে। একইভাবে বুথের মধ্যে সর্বাধিক কতজন প্রবেশ করতে পারবেন, অ্যালার্ম বাজার ক্ষেত্রে তার সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে । বাড়ানো হবে আওয়াজের ডেসিবেলের সীমাও। এছাড়াও, আরও একটি প্রযুক্তি যোগ করা হচ্ছে ৷ সেটি হল সন্ধ্যা সাড়ে 6টা বাজলেই জানা যাবে কোন বুথে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে এবং কোন কোন বুথে কতজন লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ৷ মোটামুটি কতটা সময় লাগতে পারে ওই বুথে নির্বাচন শেষ হতে, তার আন্দাজ পেতেই এই ব্যবস্থা । তাই দ্বিতীয় দফা থেকেই এআইয়ের ব্যবহারে একাধিক প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনতে চলেছে কমিশন।
আরও পড়ুন
1. নামেই জিআই ট্যাগ, ধুঁকছে বাংলার তাঁত; কী বলছে তাঁত শিল্পীদের জনাদেশ ?
2. অধীরের ঘূর্ণি পিচে কি ঝোড়ো ব্যাট করবেন 46 কোটির ইউসুফ পাঠান ?
3. পৃথক রাজ্য নয়, পাহাড়ে চাই বিকল্প রাজনীতি; ইটিভি ভারতে অকপট বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী