শিলিগুড়ি, 22 মে: পরপর প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য উত্তরবঙ্গে ! এবার প্রশ্ন উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে । 1 মে থেকে 15 মে পর্যন্ত 10 জন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে এই হাসপাতালে । ফলে প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার মান ও পরিকাঠামো নিয়ে। বিষয়টি নজরে আসতেই রিপোর্ট তলব করল স্বাস্থ্য দফতর ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, যে দশজন প্রসূতি মারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ইসলামপুর থেকে দু’জন, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দু'জন এবং ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া ও শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে একজন করে প্রসূতি সঙ্কটজনক অবস্থায় রেফার হয়ে এখানে এসেছিলেন । তাঁদের কারও কিডনির, কারও হার্টের সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল । তাই তাঁদের প্রয়োজনীয় সব রকম চিকিৎসার পরিষেবা দেওয়ার পরও বাঁচানো সম্ভব হয়নি ।
স্বাস্থ্য দফতর প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য একাধিক বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে । বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে । সেই জায়গায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাত্র 15 দিনে 10 প্রসূতির মৃত্যুতে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
এদিকে, প্রসূতি মৃত্যুতে চাপে পড়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । বিষয়টি নজরে আসতেই স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে প্রসূতি বিভাগের ওপর নজরদারির জন্য বিশেষ দল গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ । এই দল অতর্কিতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ পরিদর্শন করবে । সেখানকার চিকিৎসা পরিষেবার মান যাচাই করা, কোথাও কোনও গাফিলতি কিংবা ত্রুটি রয়েছে কি না, সবকিছু দেখে তারা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে রিপোর্ট পাঠাবে । সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার নন্দন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘15 দিনে 10 জন প্রসূতির মৃত্যু উদ্বেগজনক ঘটনা ! তবে এ ক্ষেত্রে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসার গাফিলতি নেই ।’’ প্রসূতি বিভাগের ফেসিলিটি নোডাল অফিসার সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা চাই না একটিও মৃত্যুর ঘটনা ঘটুক । কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে রেফার হয়ে আসা প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল । প্রথম অবস্থাতেই প্রসূতিদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কিছু দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন । কারও কিডনির অসুখ, লিভারের সমস্যা রয়েছে কি না বা অন্য কোনও জটিল রোগে আক্রান্ত কি না, সেটা প্রথমেই নির্ণয় করা প্রয়োজন । রোগ নির্ণয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা শুরু করতে হবে । গত 15 দিনে যে 10 জন মারা গিয়েছে, তাঁদের এধরনের জটিল শারীরিক সমস্যা ছিল । সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁদের আমরা শেষ মুহূর্তে পেয়েছিলাম । এই পরিস্থিতিতে করার কিছু থাকে না ।’’
আরও পড়ুন: