ডায়মন্ড হারবার, 16 জুন: লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকেই বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণ, মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দালের বিরুদ্ধেও ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা-সহ জেলার চারটি লোকসভা কেন্দ্রের বেশকিছু বিজেপি কর্মী সমর্থক এখনও তাঁদের বাড়ি ফিরতে পারেননি বলে অভিযোগ ৷ জেলায় আক্রান্ত বিজেপি সমর্থক ও ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে রবিবার ডায়মন্ড হারবারে এলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ৷
এদিন দুপুরে বিজেপির বারুইপুরের দলীয় কার্যালয়ে বেশ কিছু আক্রান্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থক ও ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন সুকান্ত মজুমদার ৷ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মনোবল যাতে ভেঙে না পড়ে, তাই তাঁদের চাঙ্গা করতে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত বলেন, "দল আক্রান্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের পাশে রয়েছে। আইনের উপর আস্থা ও ভরসা আছে ৷ অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে সব বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা লড়াই চালিয়েছে তাদের লড়াই ব্যর্থ হবে না।"
অভিযোগ, জেলায় বিজেপি কর্মীদের বাড়ি-ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৷ ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে করুণ পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের এমনটাই অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে ।
শনিবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে ঘরছাড়া ও আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ৷ তাঁরা যাতে অবিলম্বে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেদিকেও আশ্বাস দেন তিনি ৷ এদিন দক্ষিণ 24 পরগনার বারুইপুরের পর জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার নিকারীঘাটা গ্রামপঞ্চায়েতের বাজারে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী উত্তম নস্করের বাড়িতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। উত্তম নস্করের বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি ৷ আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি ৷ এর পাশাপাশি ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
এদিন আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার পর সুকান্ত বলেন, "আগে মুঘল আমলে আমরা দেখতাম যুদ্ধের পর ঘরবাড়ি লুট করে আগুন লাগিয়ে দিত। আমরা এই ঘটনাগুলি ইতিহাসের পাতায় পড়েছি, টিভি সিরিয়ালে দেখেছি কিন্তু এই রাজ্যে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসার কারণে বহু বিজেপি কর্মী-সমর্থক এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি ৷ তাঁদের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। আমাদের কর্মীরা প্রাণভয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছে ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও তাদের সঠিকভাবে ব্যবহার করেনি জেলার পুলিশ আধিকারিকরা ৷ কার্যত কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অকেজো করে রেখেছে রাজ্যের পুলিশ ৷ ভোটের নামে সন্ত্রাস চলছে গোটা রাজ্যে ৷"
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে সুকান্ত বলেন, "আমাদের দেশের আইন ব্যবস্থার উপর আমাদের ভরসা রয়েছে । আমরা আইনি পথে লড়াই করব ৷ আমাদের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে যে অত্যাচার হয়েছে, সেই অত্যাচারের আমরা আইনতভাবে লড়াইয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেব ৷ আমরা আইনের উপর ভরসা রেখেছি কিন্তু একটা সময় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙবে ৷"