জলপাইগুড়ি, 6 জুলাই: লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরের জেলাগুলি। শুক্রবার রাতভর বৃষ্টির জেরে জল জমে জলমগ্ন জলপাইগুড়ি শহরের একাধিক ওয়ার্ড। তিস্তা, জলঢাকার অসংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। উত্তরবঙ্গের অবস্থা ভালো নয় বলেই জানাচ্ছেন খোদ সেচ দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়র ৷
বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার ৷ জলঢাকা নদীর 31 নং জাতীয় সড়ক থেকে মাথাভাঙা পর্যন্ত ইতিমধ্যেই লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি তিস্তা নদীর দোমহনী থেকে মেখলিগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় আবার হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জলঢাকার সংরক্ষিত এলাকাতেও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া কোচবিহারের মানসাই, আলিপুরদুয়ারের রায়ডাক নদীতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারির ফলে শুক্রবার থেকে তিস্তার নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে মেখলিগঞ্জ এলাকায়। তিস্তা নদীর গ্রাসে চলে গিয়েছে সদর ব্লকের বাহির চর। সেখানে 50টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তিস্তা নদীর গাজোলডোবা ব্যারেজ থেকে এদিন সকালে 2900 কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে (নর্থ ইস্ট) বিভাগ সূত্রে।
জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিস্তা নদীর আপার ক্যাচমেন্টে ও লোয়ার ক্যাচমেন্টের দার্জিলিং, কালিম্পং জেলায় অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। কোচবিহারের মাথাভাঙায় 113.2 মিলিমিটার, 31 নং জাতীয় সড়কে 126.4 মিলিমিটার, নাগরাকাটায় 121.2 মিলিমিটার, জলপাইগুড়ি 154.1 মিলিমিটার, আলিপুরদুয়ার 120.6 মিলিমিটার, কোচবিহার 125.6 মিলিমিটার, বাগরাকোটে 145.2 মিলিমিটার, ফালাকাটায় 123.2 মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলার চেপানিতে 163 মিলিমিটার, বারোবিশাতে 207.6 মিলিমিটার, কুমারগ্রামে 145.4 মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলার তিস্তা, জলঢাকা ক্যাচমেন্টে ভালো বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার জেলার রায়ডাক, সংকোষ ও কোচবিহার জেলার তোর্ষার ক্যাচমেন্ট অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। আর এই বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন অবস্থা উত্তরবঙ্গের ৷ এ প্রসঙ্গে সেচ দফতরের নর্থ-ইস্ট বিভাগের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, "উত্তরবঙ্গের অবস্থা ভালো নয়। আমরা অনেক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছি। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, শিলিগুড়ি মহকুমার সব নদীগুলোর জলস্তরও বেড়েছে। তবে এখনই বন্যা পরিস্থিতি বলা যাবে না। জলমগ্ন হওয়ার খবর আসছে। অনেক নদীর পাড়ও ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ৷"