বোলপুর, 3 অগস্ট: সম্পূর্ণ জলমগ্ন কোপাই নদীর তীরে অবস্থিত সতীপীঠের অন্যতম কংকালীতলা মন্দির ৷ দেবীর গর্ভগৃহে পর্যন্ত জল ঢুকে গিয়েছে ৷ বন্ধ পূজার্চনা ৷ তবে দেবীর ভোগ নিবেদনে খামতি রাখেননি স্থানীয় মানুষজন ও কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েত ৷ এক বুক জলের মধ্য দিয়ে শনিবার মাথায় করে পুজোর সামগ্রী নিয়ে ভোগ নিবেদন করা হল ৷
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী দক্ষযজ্ঞের সময় দেবীর কাঁখ পড়েছিল শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত কোপাই নদীর তীরে ৷ সেই থেকে এই স্থানের নাম কংকালীতলা। দেশের 51টি সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম এই বীরভূমের কংকালীতলা মন্দির। বৃহস্পতিবার রাতভর টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের একাধিক জায়গা জলমগ্ন। কোপাই নদী ও অজয় নদ কার্যত ফুঁসছে ৷ জেলার মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে এই বোলপুরে ৷ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 202.6 মিলিমিটার। তার উপর তিলপাড়া জলাধার থেকে 5 হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই জল থৈ থৈ অবস্থা। বাদ যায়নি কংকালীতলা মন্দিরও ৷ কোপাই নদী প্লাবিত হয়ে দেবীর গর্ভগৃহেও জল ঢুকে গিয়েছে। জলমগ্ন সমগ্র মন্দির চত্বর-সহ বলি দেওয়ার স্থান, ভোগের স্থান, পবিত্র কুণ্ড পর্যন্ত প্লাবিত ৷ শুক্রবার থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে মন্দিরে সাধারণ মানুষের প্রবেশ। বন্ধ পূজার্চনাও ৷ তবে দেবীর ভোগ নিবেদনে খামতি রাখেননি স্থানীয় মানুষজন-সহ কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েত। যথারীতি এক বুক জল পার হয়ে মাথায় করে দেবীর ভোগ ও পূজার সামগ্রী মন্দিরে নিয়ে আসা হয় ৷ রীতি মেনেই ভোগ নিবেদন করা হয় ৷
কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বোঝা যাচ্ছে না ৷ কারণ বোলপুরের চতুর্দিক জলমগ্ন। যদি, আবারও বৃষ্টি হয় পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা ৷
প্রসঙ্গত, কোপাই নদীর গোয়ালপাড়া সেতু জলের তলায় ৷ বন্ধ শান্তিনিকেতন থেকে কসবা হয়ে পাঁড়ুই যাওয়ার রাস্তা ৷ একাধিক গ্রাম বোলপুর শহরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ৷ পাশাপাশি, লাভপুর ও ইলামবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা, চাষের জমি জলমগ্ন। বহু দোকান ঘর, কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত।
কংকালীতলা মন্দিরে সেবাইত জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, "মন্দিরে পুজো বন্ধ। কিন্তু মায়ের ভোগ নিবেদন বন্ধ রাখলে তো হবে না ৷ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মামনদার নেতৃত্বে ভোগ নিবেদন করা হল ৷ আশা করি জল কমে যাবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।"