শিলিগুড়ি, 5 জুন: দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে টানা দ্বিতীয়বারের জন্য জয়ী হয়েছেন বিজেপির রাজু বিস্তা। জিতেছেন প্রায় 1 লক্ষ 67 হাজার ভোটে। গত 2019 লোকসভা নির্বাচনে 4 লক্ষ 13 হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। এবার ব্যবধান কমলেও জয় অব্যাহত রাখতে পেরেছেন । শিলিগুড়ি পৌরনিগম এলাকাতেও দারুণ ফল করেছে বিজেপি। একটি ছাড়া অন্য সমস্ত ওর্যাডে হেরেছে তৃণমূল। পিছিয়ে খোদ মেয়র গৌতম দেবের ওর্য়াডেও। স্বভাবতই রাজু বিস্তার এই জয়ের পর তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার সংগঠন ও সাংগঠনিক ক্ষমতা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
দার্জিলিং জেলার সমতলের 4টি ব্লক ও শিলিগুড়ি পৌরনিগমে রাজ্যের শাসকদলের ক্ষমতায়। তারপরও শহর ও গ্রামাঞ্চলের ভোটে কেন ধ্বস নামল তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে দলীয় নেতৃত্বরা । প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি পৌরনিগমের 33টি ওয়ার্ডে 66 হাজার ভোট বেশি পেয়েছে বিজেপি । একটি ওয়ার্ড ছাড়া খোদ মেয়র গৌতম দেব, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী-সহ মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যান, এমনকী একজন কাউন্সিলরাও নিজেদের ওয়ার্ড থেকে লিড দিতে পারেননি ৷
একইভাবে, মহকুমার মাটিগাড়া নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া বিধানসভাতেও ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। শুধুমাত্র, লিড দিয়েছে চোপড়া বিধানসভা । পাশাপাশি পাহাড়ের তিনটি বিধানসভাতেও এই নির্বাচনে ব্যবধান কমেছে। দলের একাংশের মতে, তৃণমূলের খারাপ ফলের অন্যতম কারণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দার্জিলিঙে তৃণমূলের সংগঠনে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ মোটেই নতুন নয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির অন্যতম কারণও সেটাই। এমনই মনে করছে দলের একাংশ।
যদিও বিরোধীদের একাংশের মতে, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ, জিটিএ, শিলিগুড়ি পৌরনিগমও নির্বাচনে একছত্রভাবে জয়ের পর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে গিয়েছিলেন কয়েকজন নেতা। নির্বাচনী প্রচারের সময়ও গৌতম দেবকে দেখা গিয়েছিল প্রার্থী ছাড়াই শিলিগুড়ির বিভিন্ন ওর্য়াডে প্রচার করতে ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে 4 লক্ষ 13 হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন রাজু বিস্তা। এবার তা কমে 1 লক্ষ 66 হাজারে নেমে যায়। শিলিগুড়ি পৌরনিগমের 33টি ওয়ার্ডেই 66টি হাজারের লিড নিয়েছে বিজেপি। গতবার অর্থাৎ 2019 লোকসভা নির্বাচনে পৌরনিগম থেকে 39 হাজারের লিড পেয়েছিল বিজেপি।
তৃণমূলের বিপুল জয়ে 'সেনাপতি' অভিষেকই সিকন্দর !
চোপড়ায় 2019 লোকসভা নির্বাচনে 31 হাজার লিড পেয়েছিল তৃণমূল। এবার তা বেড়ে 56 হাজার হয়েছে। একইভাবে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং বিধানসভা আসনে 32 হাজার 366টি, কালিম্পং আসনে 19 হাজার 132টি, কার্শিয়াং আসনে 28 হাজার 472টি ভোট কম পেয়েছে। সেই জায়গায় বিজিপিএম এবার ওই 3 আসনে 62 হাজার 215টি ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে।
ফল বের হতেই বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূল
একইভাবে মাটিগাড়া নকশালবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা দু'টিতে এবারের নির্বাচনে 1লক্ষ 10হাজার ভোটের লিড নিয়েছে বিজেপি। 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়েও ওই দুই আসনে লিড ছিল 74 হাজার। ফলে সেখানেও 35 হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভার অধীনে থাকা 14টি ওয়ার্ডে 22 হাজারের লিড নিয়েছে বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে ওই 14টি ওয়ার্ডে বিজেপির লিড ছিল 18হাজার 556টি।