সন্দেশখালি, 23 মে: ভোটের আবহে আবারও চর্চায় সন্দেশখালি । স্টিং ভিডিয়ো-কাণ্ড বিতর্কের মধ্যেই এবার সামনে এসেছে অডিয়ো ক্লিপ । যেখানে একাধিক পুরুষ-মহিলার কন্ঠস্বর শোনা গিয়েছে । 'রেখা পাত্রের মুখের দাগ’ সংক্রান্ত কথাবার্তা থেকে শুরু করে সেই অডিয়ো ক্লিপে উঠে এসেছে, 'দরকার হলে কলাগাছ কেটে ফেলতে হবে, দাদা বলেছেন’ - এমন আরও অনেক কিছু । অডিয়ো ক্লিপে এসেছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের নামও । তিন (সম্ভবত তিনই) কণ্ঠের এই কথোপোকথন কাদের মধ্যে ? সাজানো নয় তো ? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ৷ যদিও এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত ।
তবে, এই নিয়ে সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো দাবি করেছেন, এই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে যে মহিলার কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে, তিনি স্থানীয় বিজেপি নেত্রী মাম্পি ওরফে পিয়ালি দাসের । শুভঙ্কর ও সুজয় মাস্টার বলে আরও দু'জনের নামও উল্লেখ করেছেন সুকুমার । তবে, মাম্পি-সহ সন্দেশখালির একাধিক বিজেপির নেতা-নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি । পরে সুজয় মণ্ডল নামে এক বিজেপি নেতা দাবি করেন, অডিয়োতে যে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, সেটা তাঁর নয় ৷ তাঁর কণ্ঠস্বর বিকৃত করা হয়েছে ৷ তিনি পালটা তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন ৷
বছরের শুরু থেকেই উত্তাল সন্দেশখালি । জমি জবর দখল, নারী নির্যাতনের একের পর এক অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করে । যা ঘিরে প্রতিবাদের আগুন আছড়ে পড়েছিল সন্দেশখালির মাটিতে । আর নারী নির্যাতনের এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ভোটের মরশুমে তৃণমূলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালায় বিজেপি । এর মাঝেই উলটো হাওয়া বইতে শুরু করে সেখানে । মে মাসের শুরুতেই পরপর দু’টি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় । সেই ভাইরাল ভিডিয়োকে পাল্টা তৃণমূল হাতিয়ার করে দাবি করতে শুরু করে, 'সমস্ত অভিযোগ বিজেপির সাজানো এবং পূর্বপরিকল্পিত’ ।
এর মধ্যেই আরেকটি অডিয়ো প্রকাশ্যে এল । যেখানে উঠে এসেছে কোনও এক প্রভাবশালী নেতার কথা । অডিয়ো-তে বলা হয়েছে, সেই দাদার নির্দেশ ছিল দরকার হলে কলাগাছ কেটে দাও । অর্থাৎ খুন করে দেওয়ার নির্দেশও ছিল । তবে এই কথাবার্তায় উল্লেখিত এই ‘দাদা’ কে, তা স্পষ্ট করে বলা নেই অডিয়ো-তে ।
পাশাপাশি কথাবার্তায় উঠে এসেছে, বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের মুখে দাগ কী করে হল, সেই প্রশ্নও । অডিয়ো বার্তায় বলা হয়েছে, কোনও এক দাদার নির্দেশে এটা নিয়ে নাটক হয়েছে । অডিয়ো-তে প্রশ্ন করা হয়েছে, মারধর-জমি আন্দোলনের মাঝে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত আন্দোলন উঠল কী করে ? এই বিস্ফোরক অডিয়ো প্রকাশ্যে আসায় ফের রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে ।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, "সন্দেশখালিতে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল, তা পূর্বপরিকল্পিত । সেটা সামনে এসেছে । এখন সন্দেশখালির মানুষ বুঝুক । যেখানে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা তুলতে খুন করার কথা বলা হয়েছে । আমরা প্রশাসনকে বলব, যারা এই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করল । তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক জেলা প্রশাসন ।"
আরও পড়ুন: