রায়গঞ্জ, 19 সেপ্টেম্বর: আরজি করের ঘটনার পর গোটা রাজ্যে পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল। এবারে উর্দি পরে মদ্যপ অবস্থায় এক পুলিশ কর্মীর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের ঘড়িমোড় এলাকায়। ওই ভিডিয়ো স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর ফের পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শহরজুড়ে। এই ঘটনা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
মদ্যপ অবস্থায় এক উর্দিধারী পুলিশ কর্মীর ভিডিয়ো এখন ভাইরাল (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত)। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বুধবার রাতে রায়গঞ্জ শহরের ঘড়িমোড় এলাকায় রাস্তায় ঠিকমতো হাঁটতেও পারছেন না ওই পুলিশ কর্মী। কোনও ক্রমে সেখান থেকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। সেই অবস্থায় তাঁকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন স্থানীয় মানুষ ৷ কিন্তু, ঠিক মতো কথাও বলতে পারছেন না তিনি। তাঁর নাম জিজ্ঞেস করলে নিজের নেমপ্লেটটিও হাত দিয়ে ঢেকে দেন তিনি। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা সেই পুলিশ কর্মীকে একটি টোটোয় তুলে দেন। এই ঘটনা স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছে শহরজুড়ে। এই ঘটনায় পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার।
বাসুদেব সরকার বলেন, "রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার কঙ্কালসার অবস্থা, যা বারে বারে সামনে আসছে। আরজি করে ঘটনায় আমরা দেখেছি একজন মহিলা ডাক্তারকে এই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ও রাজ্য সরকার নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এই রাজ্যে পুলিশের কঙ্কালসার অবস্থা যা বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে। পুলিশ কীভাবে যে কোনও ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য অতিসক্রিয় হয়েছে, তা সামনে এসেছে বিভিন্ন ঘটনায়। গতকাল পৌনে দশটা নাগাদ এক উর্দিধারী পুলিশ অফিসার গলি থেকে টলতে-টলতে বেরোচ্ছেন, গলির মধ্যে মেয়েদের কটুক্তি করছেন। ঘড়ি মোড়ে যখন এসেছেন, তখন তিনি হাঁটতেও পারছেন না । টলে-টলে পড়ে যাচ্ছেন । আর এই পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেবে ? হাস্যকর ব্যাপার !"
একই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, "এ রাজ্যের পুলিশের এই কঙ্কালসার অবস্থার জন্য দায়ী রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি পুলিশকে আইনশৃঙ্খলার কাজ থেকে বিরত রেখে, পুলিশকে দিয়ে দলীয় কাজ করাচ্ছেন। দলীয় ক্যাডারে পরিণত করেছেন। রাজ্য পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ। তাই আমরা চাই পুলিশ মন্ত্রী অবিলম্বে পদত্যাগ করুক।"
অন্যদিকে, ঘটনায় তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অরিন্দম সরকার বলেন, "উনি যে কাজটি করেছেন, তা সমর্থনযোগ্য নয়। উনি ডিউটিতে ছিলেন কি না, তা জানা নেই ৷ তবে উর্দি পরে ডিউটি অবস্থাতে কেউ যদি মদ খায় তবে অবশ্যই সেটি একধরনের ক্রাইম। এ বিষয়ে অবশ্যই জেলা পুলিশ প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কোনও মহিলাকে কটুক্তি করা হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। এটা বিজেপির অভিযোগ। যদি কোনও মহিলাকে কটুক্তি করা হয়, তাহলে তিনি অবশ্যই থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাবেন।"
তবে, এই ঘটনায় রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "ওই পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করেছি।"