কলকাতা, 17 অক্টোবর: সিপিএমের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রকৃত কমিউনিস্ট হয়ে ওঠার শপথ নিতে আহ্বান জানালেন বিমান বসু ৷ সদ্য প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কথা স্মরণ করিয়ে রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূলকে পরাস্ত করে নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত কমিউনিস্ট হয়ে ওঠার বার্তা দিলেন বিমান ৷
বৃহস্পতিবার সিপিএমের মুখপত্রে এই প্রসঙ্গে বিমান বসু লেখেন, "ইয়েচুরি বলতেন, ‘ভারতের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ময়দান প্রসারিত করতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই যুগপৎ লড়াই সংগ্রামে অংশ নিতে হবে ৷’ তাই প্রতিষ্ঠা দিবসে সকল পার্টিসদস্যকেই সংগ্রামের ময়দানে সামিল হতে হবে ৷ যাঁরা স্বাস্থ্যের কারণে ঘরবন্দি বা অন্য কোনও কারণে চলাফেরা করতে পারেন না, তাঁদের বাদ দিয়ে শারীরিকভাবে সক্ষম সমস্ত পার্টিসদস্য, এরিয়া কমিটির সদস্য থেকে জেলা কমিটির সদস্য-সহ, সবাইকেই পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবসে সাচ্চা কমিউনিস্ট হয়ে ওঠার শপথ নিতে হবে ৷"
নিজের লেখায় কমিউনিস্ট পার্টি তৈরির ইতিহাস এবং তার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন বিমান। 1920 সালের 17 অক্টোবর সোভিয়েত রাশিয়ার উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ শহরে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের নেতৃত্বে 7 জন নেতার উদ্যোগে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়েছিল বলে তিনি জানান ৷ পাশাপাশি তিনি জানান, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির বিকাশ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির মধ্য দিয়ে হয়নি। হয়েছে সক্রিয়তার মধ্য দিয়ে। সে কথা উল্লেখ করে বিমান লেখেন ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির বিকাশে বড় ভূমিকা নিয়েছে কয়েকটি পত্র-পত্রিকা ।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ ভারতের স্বরাষ্ট্র দফতরের নথিও তুলে ধরেন তিনি । সেখান থেকে জানা যায় 'আত্মশক্তি', 'ধূমকেতু', 'দেশের বাণী', 'নয়া যুগ', 'সোশালিস্ট', 'লেবার গেজেট', 'নবযুগম', 'ইনকিলাব' ও 'কীর্তি' পত্রিকা স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবীদের কমিউনিস্ট ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হতে সাহায্য করেছে ৷ এখানেই তিনি 1920 সালের মে মাসে সওকত ওসমানি মুজফ্ফর আহমদের গ্রেফতারির কথা লেখেন ৷
এদিন বিমান বসু আরও লেখেন, "বিগত 104 বছর কেন, সাম্প্রতিক সময়েও পার্টির সফলতা ও বিফলতা নিয়ে কোনও পর্যালোচনায় ব্রতী হতে চাইছি না ৷ পার্টির প্রবীণ সদস্যরা পঞ্চাশের দশক ও ষাটের দশকে অনেক রক্তক্ষয়ী আন্দোলন সংগ্রামের সাক্ষী ৷ তুলনামূলকভাবে যাঁরা প্রবীণ নন, তাঁরাও আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন ৷ কিন্তু, আরএসএস এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রদায়িকীকরণের বিভেদকামী রাজনীতিকে পরাস্ত করতে অবশ্যই গণতন্ত্রপ্রিয় প্রগতিশীল সব অংশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে বেশি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে ৷ যা কোনও স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় সম্ভব নয় ৷ সক্রিয়ভাবে এই কাজে যুক্ত হতে হবে ৷"