কলকাতা, 18 সেপ্টেম্বর: তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী করার দাবি তুললেন হুমায়ুন কবীর ৷ সোমবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক বলেছেন, ‘‘এখনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য প্রশাসনে অভিষেক হওয়া দরকার ।’’
রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কিত নেতা হিসেবে পরিচিত হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, ‘‘অভিষেককে উপমুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হোক । এখনই অভিষেককে এই দায়িত্ব দেওয়া হলে একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর থেকে লোড কমবে বা ভার লাঘব হবে । এতে সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন ।’’
উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য প্রশাসনে নিয়ে আসার দাবি নতুন নয় ৷ তৃণমূলের বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মীরা কখনও সরাসরি, কখনও আকারে-ইঙ্গিতে এই দাবি তোলেন ৷ দিনকয়েক আগে আরেক তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজ অভিষেককে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেই উল্লেখ করেছিলেন ৷ আবার অভিষেকের জন্মদিনের আগে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বলে উল্লেখ করেছিলেন ৷
তবে হুমায়ুন কবীর আরও একধাপ এগিয়ে এখনই অভিষেককে মমতা-প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুললেন ৷ যদিও একই কথা তাঁর মুখে আগেও শোনা গিয়েছে ৷ সপ্তাহখানেক আগেই তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করার কথা বলেছিলেন ৷ জানিয়েছিলেন, অভিষেককে স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব দিলে রাজ্যের ভালো হবে । সোমবার বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে কার্যত সেই কথারই পুনরাবৃত্তি শোনা গেল তাঁর গলায় ৷
তাহলে কি তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর অনাস্থা প্রকাশ করছেন ? হুমায়ুনের বক্তব্যে অবশ্য তেমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি ৷ ভরতপুরের বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের মন্ত্রিসভা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলুক । আগামী নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই আমরা লড়াই করব । সেই সঙ্গে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই হোন । তবে তাঁর ডেপুটি হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হোক । সেই সঙ্গে তাঁকে (অভিষেক) পুলিশ মন্ত্রী করা হোক ।’’
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা ৷ বিশেষ করে আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সরাসরি কাঠগড়ায় তোলা হয় কলকাতা পুলিশকে ৷ সম্প্রতি কসবায় কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি চালনার ঘটনাতেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে লালবাজার ৷
এতদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিরোধী নেতাদের সরব হতে দেখা যেত ৷ এখন তো সরাসরি সরব হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম-সৌগত রায়ের মতো তৃণমূলের সিনিয়র নেতারা ৷ সেই পরিস্থিতিতে হুমায়ুন কবীরের মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নয়া বিতর্ক উস্কে দিল ৷