বোলপুর, 13 নভেম্বর: 2019 সালের পর ফের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার আয়োজন করতে চলছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ অর্থাৎ, আগের মতো পূর্বপল্লীর মাঠে ফিরছে একদা বন্ধ হয়ে যাওয়া পৌষমেলা ৷ বুধবার ম্যারাথন বৈঠক করে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ তবে, আগের মতোই মেলার জন্য রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হবে ৷
উল্লেখ্য, 2023 সালে রাজ্য সরকারকে মেলার আয়োজন করতে দিয়েছিল বিশ্বভারতী ও মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ৷ যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ৷ কিন্তু, আজ পৌষমেলার আয়োজন নিয়ে বৈঠকে বসে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্যরা ৷
বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, "এবার পৌষমেলার যথারীতি শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট করবে ৷ সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবে ৷ 2019 সালের পর আবারও 2024 সালে এই মেলার ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী হবে ৷ তবে, আগের মতো রাজ্য সরকারের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হবে ৷ সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হবে তাদের ৷ এটাই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৷"
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের ডিডে উল্লেখ রয়েছে, প্রতি বছর পৌষ মাসের সাত তারিখ একটি মেলার আয়োজন করবে ট্রাস্ট ৷ আর তার জন্য সমস্ত রকম সহযোগিতা করবে বিশ্বভারতী ৷ চিরাচরিত সেই প্রথা অনুযায়ী পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা চলে আসছে ৷ প্রথমে পুরনো মেলার মাঠে হতো এটি ৷ কালের নিয়মে মেলার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বপল্লির মাঠে হয়ে আসছিল পৌষমেলা ৷
2019 সালে শেষবার পূর্বপল্লির মাঠে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা করেছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ তার পরের বছর, অর্থাৎ 2020 সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল মেলা ৷ এরপর 2021 ও 2022 সালে বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নানা মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতভেদ তৈরি হয় ৷ এই সংঘাতের জেরে পৌষমেলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন উপাচার্য ৷
সেই দু-বছর বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে একটি মেলা করেছিল রাজ্য সরকার ৷ 2023 সালে পৌষমেলা করার জন্য পূর্বপল্লির মাঠ রাজ্য সরকারকে দিয়েছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ কেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত মেলার আয়োজন করতে মাঠ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হল ? এই নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয় ৷ তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল ৷
এবার, ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার আয়োজন করছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ এদিন, বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে মেলার আয়োজন নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক হয় ৷ বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেনের তত্ত্বাবধানে এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, 2019 সালের পর 2024 সালে পূর্বপল্লির মাঠে ফিরছে পৌষমেলা ৷ তবে, আগের মতোই জল, বিদ্যুৎ, নিকাশি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের সহযোগিতা নেবে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷