দার্জিলিং, 4 ডিসেম্বর: ফের সান্দাকফু বেড়াতে গিয়ে মৃত্যু হল পর্যটকের । পরপর পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে শৈলশহরে । ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা । বারবার পর্যটকের মৃত্যু হওয়ায় উদ্বিগ্ন পর্যটনমহল ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অঙ্কিতা ঘোষ (28)। তিনি উত্তর 24 পরগনার দমদমের অশোকনগরের মুকুন্দ দাস রোডের বাসিন্দা । দু'দিন আগে তিনি বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে পাহাড়ে বেড়াতে যান । দার্জিলিং থেকে মানেভঞ্জন হয়ে তাঁরা সান্দাকফু গিয়েছিলেন । সেখান থেকে মঙ্গলবার ফিরে এসে রাতে টুংলিংয়ে ছিলেন ।
এদিন রাতে খেয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলেন অঙ্কিতা । এরপর মধ্যরাতে আচমকাই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন । বন্ধুরা তাঁকে নিয়ে আসেন সুখিয়াপোখরি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে । ওই তরুণীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাঁকে দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে রেফার করেন । সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে অঙ্কিতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক । তবে মৃত্যুর সঠিক কোনও কারণ এখনও জানা যায়নি । দেহ ময়নাতদন্তের জন্য দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।
এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, "এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে । পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে । ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে ।" এবিষয়ে দার্জিলিং সদরের মহকুমাশাসক রিচার্ড লেপচা বলেন, "সান্দাকফু বেড়াতে গিয়ে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে । প্রশাসনের তরফে সমস্তরকম ব্যবস্থা করা হবে ।"
প্রসঙ্গত, নভেম্বর মাসের শেষেই কলকাতার ভবানীপুরের এক পর্যটকের মৃত্যু হয় সান্দাকফু বেড়াতে গিয়ে । এর আগে চলতি বছরের 26 মে-তে উত্তর দিনাজপুরের 29 বছরের এক পর্যটকেরও একইভাবে মৃত্যু হয়েছিল । 2022 সালে অক্টোবর মাসে ইজরায়েলের এক পর্যটক মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফুতে ট্রেকিং করতে যান ৷ রাতে টেন্টে ঘুমানোর পর ঘুমের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয় ।
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 11 হাজার 950 ফুট উচ্চতায় দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ৷ পরপর সেখানে পর্যটকদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় এবার কড়া পদক্ষেপ করছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) প্রশাসন । পর্যটকদের জন্য ডিসেম্বর থেকেই কড়া নিয়ম চালু হচ্ছে ৷ মানেভঞ্জনে প্রথমেই করা হবে পর্যটকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ৷ সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই সেখান থেকে পর্যটকদের সান্দাকফু যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে । তবে এই ব্যবস্থা শুরুর আগেই আবারও পর্যটকের মৃত্যুতে চিন্তায় পর্যটনমহল ৷