কলকাতা, 1 অক্টোবর: মহালয়ার আগের সন্ধ্যায় লক্ষ মানুষের মিছিল কলকাতার রাস্তায় ৷ আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে 'রাস্তা দখল' শিরোনামে 60টির বেশি অরাজনৈতিক সংগঠন আজ কলেজ স্কোয়ার থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত নাগরিক মিছিলের ডাক দেয় ৷ সেই মিছিলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ন্যায় বিচারের দাবিতে স্লোগান তুলেছেন ৷ সুর চড়িয়েছেন শাসকদলের বিরুদ্ধেও ৷ নজিরবিহীনভাবে এই অরাজনৈতিক মিছিলে পা-মেলালেন রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা ৷
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, কল্লোল মজুমদার-সহ একাধিক বাম রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন দলীয় রংকে সরিয়ে রেখে ৷ এমনকি এই মিছিলে মাঝপথে যোগ দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের নবনিযুক্ত সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও ৷ অন্যদিকে, আইএসএফের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীও মিছিলে ছিলেন আজ ৷ তাঁরা প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পতাকা ছেড়ে মিছিলের শেষের দিকেই হাঁটলেন ৷ তবে, মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে দাবি এবং স্লোগান উঠেছে, তাতে গলা মেলালেন তাঁরা ৷
উল্লেখ্য, আগামিকাল মহালয়া থেকে দেবীপক্ষের সূচনা হচ্ছে ৷ পুজোয় উৎসব কতটা হবে, সেটা সময় বলবে ৷ তবে, পুজোর মাঝেও যে প্রতিবাদ, আন্দোলন ও ন্যায় বিচারের দাবি উঠবে, একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী বাম ও কংগ্রেস নেতারা ৷
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও মানুষ একই দাবিতে রাস্তায় আছেন। ন্যায় বিচার পেতের রাস্তাকেই মানুষ বেছে নিয়েছেন। বিকল্প উপায় নেই। যতক্ষণ না সঠিক এবং ন্যায়বিচার পাওয়া যাচ্ছে সাধারণ মানুষ ছাড়বে না ধারাবাহিকভাবে বিচারের দাবি উঠবে। যারা উৎসব এবং ন্যায় বিচারের দাবিকে গুলিয়ে দিতে চাইছে তারাও জেনে রাখুন এভাবে ন্যায় বিচারক আন্দোলনকে দমানো যাবে না।"
সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র বিধায়ক তথা আইএসএফ চেয়ারম্যান বলেন, "ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে সমস্ত ধর্মের বর্ণের মানুষ আজকের মিছিলে পা মিলিয়েছেন। গোটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ আরজিকরের বোনের বিচার চাইছেন। আদ্যপান্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও আমিও সেই মিছিলে পা মিলিয়েছি। কারণ, আমাদের ও নাগরিক সমাজের একই দাবি - ন্যায়বিচার। তা না-পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।"
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, "রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে দুর্নীতি এবং থ্রেট কালচার চলছে, তা এই আন্দোলনের কারণেই প্রকাশ্যে এসেছে। এই ভয়ংকর পরিস্থিতির কারণেই আরজি করের বোনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে, তাঁর ন্যায় বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত চলবেই।"