হাওড়া, 5 সেপ্টেম্বর: বৃহস্পতিবার হাওড়া স্টেশন ও তার পাশের বাসস্ট্যান্ডে বাটি হাতে ভিক্ষা করতে দেখা গেল শিক্ষকদের। ন্যাশনাল স্কিল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্কের (NSQF) অধীনে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দানকারী চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা শিক্ষক দিবসে হাওড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বাটি হাতে ভিক্ষা করে প্রতিবাদ জানান।
তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা অভিযানের অন্তর্ভুক্ত এই সকল শিক্ষকদের রাজ্যের কারিগরী দফতরের মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়। যদিও সেই নিয়োগ চুক্তি ভিত্তিক । শুধু তাই নয়, তাঁদের পাওনা পেতে হয় এজেন্সির মাধ্যমে। বিভিন্ন সরকারি ও সরকার সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের কারিগরি শিক্ষা প্রদানের কাজে তাঁরা যুক্ত। তাঁদের স্বল্প বেতনে বছরের পর বছর কাজ করানো হচ্ছে । অথচ সামাজিক সুরক্ষার কোনও সুযোগ সুবিধাই পাচ্ছেন না। এছাড়াও, বিগত বেশ কয়েকমাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের পরেও কিছুমাস ছাড়া নাকি তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং পরীক্ষার অজুহাতে শিক্ষকদের ছাঁটাই করা হয়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজ্যে প্রায় 2900 জন NSQF শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। অতীতে কমবেশি 218 জন ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট ছাঁটাই হয়েছেন। প্রায় 37 মাস হয়ে গেলেও তাঁদের কাজে ফেরানো হয়নি। একদিকে অনিয়মিত বেতন, তার সঙ্গে কর্মহীন হয়ে পড়ার আতঙ্কে তাঁরা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। এর আগে বহুবার তাঁরা নিজেদের দাবি নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। শিক্ষিত হয়ে এভাবেই যদি যন্ত্রণার সঙ্গে তাঁদের চলতে হয়, তার থেকে ভিক্ষা করা ভালো। তাই তাঁরা এদিন বাটি হাতে ভিক্ষা করতে পথে নামেন। এভাবে শিক্ষকতার চেয়ে ভিক্ষা করা ভালো বলে মনে করছেন তাঁরা।
পৌলমি মণ্ডল নামে এক শিক্ষিকার দাবি, তাঁদের সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। এছাড়াও মহিলা-সহ সমস্ত শিক্ষাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের জন্য বেতন কাঠামোয় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ছাঁটাই হওয়া ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টদেরও আবার কাজে ফেরাতে হবে। এরই সঙ্গে অবিলম্বে তাঁদের বকেয়া বেতন মেটাতে হবে। না-হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকরা।