বসিরহাট, 15 জুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত বসিরহাট ৷ শুক্রবার রাতে ভরা বাজারে গুলিবিদ্ধ এক তৃণমূল কর্মী । ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে চিহ্নিত অভিযুক্ত ৷ খবর সামনে আসতেই অভিযুক্তের বসিরহাটের বাড়ি ও দোকানে হামলার অভিযোগ ৷ অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনায় জনরোষের তত্ত্ব খাড়া করেছে শাসক শিবির ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আলতাফ মালি নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। পালানোর সময় বোমা ভর্তি একটি ব্যাগ-ও ফেলে রেখে যায় তারা । ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে বসিরহাটের পিফা বাজারে । খবর পেয়ে পুলিশ এসে বোমা ভর্তি ব্যাগটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷ সেইসঙ্গে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তা খুঁজে বের করার জন্য শুরু হয় তল্লাশি ৷ এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয় ৷ অবশেষে সেই প্রক্রিয়ায় অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ ৷
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম আয়ুব গাজি ৷ তৃণমূলের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে । এর আগে স্থানীয় একটি মেলায় গুলি চালানোর ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছিল তার । তাতে জেল-ও খেটেছিল সে । ইদানিং আয়ুবের সঙ্গে আইএসএফ নেতৃত্বের সখ্যতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের । তাদের অভিযোগ, ভোটে বিপর্যয় মেনে নিতে না-পেরে আয়ুবকে দিয়ে আইএসএফ এই ঘটনা ঘটিয়েছে ৷ অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছে তারা ৷
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ পিফা বাজারে রাস্তার পাশেই একটি জেরক্সের দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন আলতাফ । সেই সময় দু'জন দুষ্কৃতী বাইকে করে এসে পিছন থেকে তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ । গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আলতাফ । গুলির শব্দ শুনে স্থানীয়রা তাড়া করলে সঙ্গে থাকা বোমা ভর্তি একটি ব্যাগ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা দুষ্কৃতীরা । অন্যদিকে, গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে । পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে । আলতাফের ডান দিকের কোমরে গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছে । তাঁর শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট সঙ্কটজনক বলেই খবর হাসপাতাল সূত্রে ।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, হামলার নেপথ্যে বিরোধীদের হাত থাকতে পারে । অভিযোগ, ভোটে হেরে বসিরহাটে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন তাঁরা । পরিকল্পিতভাবে খুন করার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে দলের এক সক্রিয় কর্মীর উপর বলে অভিযোগ তাঁদের । যদিও শাসকদলের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বিরোধী শিবির । উলটে ঘটনার নেপথ্যে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলকে দায়ী করছেন তাঁরা।