গলসি, 17 জুলাই: রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখে চটে গেলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজাদ। শুধু তাই নয়, সেই রাস্তা থেকে স্টোনচিপ তুলে ঢুকিয়ে দিলেন জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারের পকেটে । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসির মনোহর-সুজাপুর এলাকায় । যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি ইটিভি ভারতকে জানান, যে সংস্থা রাস্তা নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মাসখানেক আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বেহাল রাস্তার খবর পান সাংসদ ৷ এরপরেই সেই রাস্তা পরিদর্শন করতে যান কীর্তি আজাদ । গলসি ব্লকের পুরসা অঞ্চলে পথশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে মাসখানেক আগে মনোহর-সুজাপুর গ্রামে প্রাইমারি স্কুল থেকে গলিগ্রাম এলাকার লকগেট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ করা হয় । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নামেই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে । রাস্তা দিয়ে চলাচল করলেই দেখা যায় পিচ নেই শুধু স্টোনচিপ পড়ে আছে । সেই খবর পেয়ে রাস্তা পরিদর্শন করতে যান সাংসদ কীর্তি আজাদ ৷ সেখানে গিয়ে তিনি এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে পাঠান। তাঁর সামনে রাস্তার অবস্থা দেখে স্টোনচিপ হাতে তুলে নিয়ে সেই পাথর ইঞ্জিনিয়ারের পকেটে গুঁজে দেন সাংসদ ।
ওই ইঞ্জিনিয়ারকে কীর্তি আজাদ ধমক দিয়ে বলেন, "এই স্টোনচিপ গুলো নিয়ে যান। আপনার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে দেখাবেন । তাঁকে জিজ্ঞাসা করবেন কী করব দেখুন এগুলো। তাঁকে গিয়ে বলবেন যে, তিনি তো আসতে পারেননি, তবে একজন সাংসদ সেখানে গিয়েছিলেন । তাদের কি এই রাস্তা চোখে পড়ে না?" তারপর উত্তেজিত হয়ে সাংসদ বলেন, "আমি রিপোর্ট করব। সাসপেন্ড করব। এই রাস্তা দিদির সরকারের টাকায়, গরিব মানুষের টাকায় রাস্তা । আমি বিষয়টি জেলাশাসককে জানাব ।" পাশাপাশি যে সংস্থা এই রাস্তা সারাইয়ের কাজ করেছে সেই সংস্থাকে দিয়েই রাস্তা করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কীর্তি আজাদ।
অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার ইটিভি ভারতকে বলেন, "ইতিমধ্যেই মাস খানেক আগে যে সংস্থা রাস্তা নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । ওই রাস্তার কাজ জুন মাসে শেষ হয়ে যায় । জুন মাসের শেষ সপ্তাহে আমরা রিপোর্ট পাই যে রাস্তার কাজ ভালো হয়নি । সেই মতো সরেজমিনে রাস্তার কাজ খতিয়ে দেখে দেখা যায় রাস্তার অবস্থা বেহাল । সেই মতো তাদের পেমেন্ট আটকে দেওয়া হয় । ওই সংস্থা জানায় বর্ষার কারণে এখন কাজ শুরু করা যাবে না । ফলে কাজ কিছুদিন বন্ধ আছে। বৃষ্টি কমলে সেই রাস্তার কাজ শুরু হবে ।"