কলকাতা, 26 জুন: বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন ৷ তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন সপ্তাহ ৷ তবু বুধবারও শপথ নেওয়া হল না তৃণমূলের দুই জয়ী বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারের। উলটে বুধবার দিনভর চূড়ান্ত নাটক দেখল রাজ্যের মানুষ। আর শপথ গ্রহণ না-হওয়ায় ফের অবস্থানে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই বিধায়ক ৷
এদিন শপথ নিতে 12টা থেকে চারটে পর্যন্ত বিধানসভায় বসে রইলেন দুই বিধায়ক। অন্যদিকে, শপথ বাক্য পাঠ করাবেন বলে 12টা থেকে দুটো পর্যন্ত রাজভবনে অপেক্ষায় রইলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এরপরেও এদিন হয়নি শপথ। বিধায়কদের চাহিদা মেনে বিধানসভা এলেন না রাজ্যপাল ৷ আড়াইটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে তিনি পাড়ি দিয়েছেন দিল্লির পথে। আর দুই বিধায়ক হাতে নির্বাচনে জয়ের সার্টিফিকেট আর প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে রইলেন বিধানসভার সিঁড়িতে। দিনের শেষে বিধানসভার খাতায়-কলমে বিধায়ক হওয়া তাঁদের হল না। বরং তাঁরা জয়ী প্রার্থী হয়েই রয়ে গেলেন।
বুধবার বিকেলে দুই প্রার্থী জানিয়েছেন, যেহেতু শপথের বিষয়টা তাঁদের হাতে নেই তাই তাঁরা রাজ্যপালের জন্য অপেক্ষা করবেন। এদিন তাঁরা বিধানসভার সিড়িতে বসে রাজ্যপালের জন্য অপেক্ষা করেছেন। আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর 12টা থেকে তাঁরা ধরনা বসবেন বিধানসভায় আম্বেদকার মূর্তির পাদদেশে।
রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এর জন্য একমাত্র দায়ী পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। দুটি কমবয়সি ছেলেমেয়ে জীবনে প্রথমবার বিধায়ক হয়েছেন ৷ তাঁদের নিয়ে রাজনীতি করছেন রাজ্যপাল। তিনি চাইলেই গোটা বিষয়টি কোনও জটিলতা ছাড়াই সব মসৃণভাবে হতে পারত। কিন্তু তাঁকে দিল্লির কাছে ভালো হতে হবে। আর সে কারণেই এই জটিলতা।" অন্যদিকে, অধ্যক্ষ বলেন, "রাজ্যপাল বিধানসভার অধিকারকে অগ্রাহ্য করতে চাইছেন। বিধায়কদের কর্মক্ষেত্র এই বিধানসভাই। তার একটা গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে, রয়েছে গরিমাও। বিধানসভাকে উপেক্ষা করে সেই গরিমাকে অসম্মান করছেন রাজ্যপাল। দু'জন বিধায়কের শপথে উনি বিধানসভায় এলে কী এমন ক্ষতি হয় ?"
ঠিক উলটো প্রশ্ন আসছে বিরোধী শিবিরের তরফ থেকে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বলছে, এই জটিলতার জন্য দায়ী রাজ্যের শাসক দল। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রীরা যদি রাজভবনে গিয়ে শপথ নিতে পারেন তাহলে দুই বিধায়কের রাজভবনে যেতে অসুবিধা কোথায়!