মেদিনীপুর, 6 জুন: 'অগ্নি'বাণে কাজ হল না ৷ জুনে-ই ভরসা রাখল মেদিনীপুরবাসী । অবশেষে বিজেপির হাতছাড়া হল গত নির্বাচনে দিলীপ ঘোষের জেতা আসন । 30 হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করে এবার কলকাতা ছেড়ে দিল্লির পথে জুন মালিয়া । মেদিনীপুরের বিধায়ক থেকে সাংসদ হিসাবে পদোন্নতি হতে চলেছে তাঁর ৷ জিতেই বললেন, "মেদিনীপুরের জন্য আরও বেশি করে কাজ করতে চাই ।"
গোটা দেশে যেমনটা আশা করেছিল তেমনটা ফল হয়নি বিজেপির ৷ সেই সঙ্গে রাজ্যেও ধরাশায়ী পদ্মশিবির । 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের জেতা একাধিক আসন হাতছাড়া ৷ ভোটের পরই যেখানে বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম বুথ ফেরত সমীক্ষায় দেখিয়েছিল, বিজেপি কমপক্ষে 20-22টি আসন পাবে, সেখানে বাস্তবে মাত্র 12টি পেয়েই ক্ষান্ত থাকতে হল তাদের । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসন ছিল মেদিনীপুর ৷ যা এখন গেরুয়া ছেড়ে সবুজময় ৷
মেদিনীপুর লোকসভায় একসময় পোড় খাওয়া তৃণমূল নেতা মানসরঞ্জন ভূঁইয়াকে হারিয়ে এই আসন দখল করেছিল বিজেপি। তৎকালীন সময় জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা দিলীপ ঘোষ । মাঝে কেটে গিয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। বিধানসভায় তৃণমূলের দখলে গিয়েছিল মেদিনীপুর ৷ এরপরে এবারের লোকসভা নির্বাচনেও এই আসনের দাবিদার ছিলেন দিলীপ ঘোষ ৷ কিন্তু তাঁকে সরিয়ে সেই জায়গায় প্রার্থী করা হয় বিজেপির নেত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলকে । লড়াইয়ে তিনি জোর টক্কর দিয়েছেন সন্দেহ নেই, তবে শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার কাছে ।
যদিও অগ্নিমিত্রা পল ভোটের প্রচারে গিয়ে এক বাক্যেই বলেছিলেন, এবারে তিনি সাংসদ হিসেবে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন । কিন্তু মেদিনীপুর-সহ বাকি ছ'টি বিধানসভা তাঁর সাথ দেয়নি। খড়গপুর কেশিয়াড়ি, দাঁতন-সহ বাকি বিধানসভাগুলিতেও ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির । যদিও প্রথম থেকেই জোর লড়াই ছিল এই দুই নেত্রীর মধ্যে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অগ্নিমিত্রা ভোটের মার্জিন কিছুতেই কমাতে পারলেন না। বাইশ রাউন্ড মোট গণনার শেষে তিনি প্রায় 30 হাজারের মত ভোটে পরাস্ত হন।
জয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জুন মালিয়া। তিনি তৃণমূলের কর্মী নেতৃত্বদের অভিনন্দন জানান এবং মেদিনীপুরের জন্য কাজ করার প্রতি মনোভাব ব্যক্ত করেন ৷ মূলত পশ্চিম মেদিনীপুরের 34 নম্বর মেদিনীপুর লোকসভা সাতটি বিধানসভা নিয়ে গঠিত । যেগুলি হল মেদিনীপুর, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খড়গপুর গ্রামীণ,অবাঙালি অধ্যুষিত খড়গপুর টাউন, কেশিয়াড়ি, দাঁতন, নারায়ণগড় এবং পূর্ব মেদিনীপুরের শেষ প্রান্ত এগরা ।