শান্তিপুর, 21 এপ্রিল: সন্দেশখালির ছায়া এবার শান্তিপুরে ! রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে একাধিক মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ । প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েও মেলেনি সুরাহা । বিজেপি প্রার্থীর জগন্নাথ সরকারের দাবি, অভিযুক্তরা শাসকদলের সমর্থক ৷ ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর থানার বাগাচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের করমচাঁপুর এলাকার ।
বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরেই মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছে প্রদীপ সরকার নামে এক ব্যক্তি । রাত হলেই অভিযুক্ত বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত মহিলাদের গায়ে হাত দিচ্ছে । জানালা দিয়ে মহিলাদের উঁকি মেরেও দেখে ওই অভিযুক্ত । এর আগেও তাঁরা প্রশাসনকে একাধিকবার বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন । কিন্তু অভিযোগ হাতে পেলেও প্রশাসন কর্ণপাত করেনি বলেই অভিযোগ জগন্নাথের । দিন কয়েক আগে এই একই কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত ৷ বাড়ির বাকিদের নজরে আসতেই পালিয়ে যায় সে ৷
এরপর অতিষ্ঠ হয়ে ফের থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে এলাকাবাসীরা । কিন্তু অভিযোগ জানানোর 72 ঘণ্টা পার হওয়ার পরও এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি । উপরন্ত যারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন, তাঁদেরও হুমকি দিচ্ছে সে । এই ঘটনা জানাজানি হতেই রবিবার এলাকায় যান রানাঘাট কেন্দ্রের বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ তথা এবারের প্রার্থী জগন্নাথ সরকার । তিনি এলাকার মহিলাদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ বিষয়টি জানতে পারেন । এরপর সকলকে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আশ্বাস দেন তিনি ।
এই বিষয়ে এলাকার বাসিন্দা সনৎ সরকারের অভিযোগ, "দিনকয়েক আগেও ওই অভিযুক্ত আমার বাড়িতে গিয়েছিল । রাতের অন্ধকারে আমার বাড়ির মহিলাদের ওপর হাত দেওয়ার চেষ্টা করে । এই অভিযুক্ত তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত । সেই কারণেই প্রশাসন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাইছে না ।"
বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলেন, "এই অভিযুক্ত প্রদীপ সরকারের সঙ্গে শান্তিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের ভালো সম্পর্ক রয়েছে । না হলে বছরের পর বছর কীভাবে ওই অভিযুক্ত এই কাজ করতে পারেন ?" মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, "এই সমস্ত অভিযুক্তদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুষে রেখেছেন । তাঁর সাহসেই এরা দিনের পর দিন এই ঘটনা ঘটিয়ে আসছে । অবিলম্বে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করা হলে আগামী দিনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো ৷"
শান্তিপুর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী বলেন, "মহিলাদের সঙ্গে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক । আমিও চাই অভিযুক্ত গ্রেফতার হোক । তবে এটাও বলব ওই পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত । তাহলে চাইলেই প্রধান এবং ওই গ্রামের পঞ্চায়েত বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হতে পারতেন । তবে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব ।"
এ বিষয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, ‘‘যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার পরিবারের তরফ থেকেও একটি অভিযোগ আগে করা হয়েছিল । অর্থাৎ, উভয়পক্ষ থেকেই অভিযোগ জমা পড়েছে । এটাতে অহেতুক রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে । আমরা উভয় পক্ষের অভিযোগ দেখে বিষয়টি তদন্ত করছি ।
আরও পড়ুন: