বর্ধমান, 25 জুন: এক বৃদ্ধার ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর দখল করে দলীয় পার্টি অফিস চালানোর অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রথমে ভাড়া হিসেবে ওই ঘরটি নিয়েছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ৷ অভিযোগ, বিগত আড়াই বছর ধরে সেই ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি ৷ তাই অগত্যা বাড়ি ফেরত চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই 70 বছরের বৃদ্ধা ৷
বর্ধমানের বৈকুণ্ঠপুর 2 গ্রামপঞ্চায়েতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ৷ বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানিয়েছেন পুষ্প চক্রবর্তী নামে ওই বৃদ্ধা ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সদস্যা মিতা দাস ৷ তিনি জানিয়েছেন, 2019 সাল থেকে সঠিক সময়েই ভাড়া দেওয়া হচ্ছে ৷ এদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনা সত্যি হলে দল যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হ্যাচারি রোড এলাকায় ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছিলেন প্রৌঢ়া পুষ্প চক্রবর্তী ৷ অভিযোগ, সেই ঘর ভাড়া নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় গড়ে ওঠে ৷ এক হাজার টাকা করে ভাড়া দেওয়ার কথা থাকলেও দু-এক মাসের মধ্যেই ভাড়ার টাকা কমে 500 টাকা হয়ে যায় ৷ এমনকী গত আড়াই বছর ধরে সেই ভাড়ার টাকাও আর দেওয়া হচ্ছে না ৷
ফলে কার্যত জবর দখল করে সেই ঘরেই চলছে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ৷ এদিকে ওই বৃদ্ধার আর্থিক অনটন থাকায় তিনি সেই বাড়ি ফেরত চেয়ে আবেদনও করেছেন ৷ কিন্তু টাকা বা বাড়ি ফেরত চাইলে তাঁকে পালটা হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ৷ শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফেরত চেয়ে বিষয়টি নিয়ে বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধা ৷
এই প্রসঙ্গে পুষ্প চক্রবর্তীর দিদি মমতা দেবী বলেন বলেন, "আমার বোনের ঘর দখল করে তৃণমূলের পার্টি অফিস চলছে। তারা প্রথমে হাজার টাকা ভাড়া হিসেবে নিয়েছিল। পরে সেটা 500 টাকা করে ৷ কিন্তু আড়াই বছর ধরে আর কোনও ভাড়ার টাকাই তারা দিচ্ছে না ৷ বোনের 70 বছর বয়স ৷ কোনও সন্তান নেই। আমরা সেই ঘর এখন ফেরত চাইছি ৷"
বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুনশ্রী মণ্ডলের কথায়, "তিনি আমাদের কাছে একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওটা ইন্দিরা আবাস যোজনার বাড়ি। ওই বাড়িতে নাকি দীর্ঘদিন ধরে পার্টি অফিস চলছে। ওই বাড়িতে অভিযোগকারী স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান বলেও জানতে পেরেছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি পাঠিয়েছি ৷ তাঁরা যেটা ভালো বুঝবেন করবেন। কীভাবে সেখানে পার্টি অফিস হল আমার জানা নেই ৷"
রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, "দলের পক্ষ থেকে কারও বাড়ি কবজা করার দায়িত্ব দেওয়া হয় না। কেউ যদি করে থাকে সেই দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে। দল এই ধরনের কাজ সমর্থন করে না ৷ শুনেছি ওই মহিলা বিডিওকে ঘটনার কথা জানিয়েছেন ৷ বিডিও তদন্ত করে দেখুন ৷ আমরা মনে করি, কেউ যদি ভাড়া নিয়ে থাকেন তবে তাঁকেই ভাড়ার টাকা মেটাতে হবে ৷ বিষয়টি প্রশাসন দেখছে ৷ তবে দলের নাম ভাঙিয়ে অনৈতিক কাজ করলে দল ব্যবস্থা নেবে ৷"