মালদা, 9 সেপ্টেম্বর: শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাহার না-করলে আরজি করের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে ! এমনই ভয়াবহ অভিযোগ উঠল মালদার এক গ্রামে ৷ অভিযোগ, পারিবারিক বিবাদের জেরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে গত 6 সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ৷ সেই ঘটনায় এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল ৷ অভিযোগ, সেই এফআইআর প্রত্যাহার না-করলে নিগৃহীতাকে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী ৷ এমনকি শনিবার রাতে নিগৃহীতার বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷
একদিকে আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে রাজ্য, দেশ তথা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ৷ সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি চলছে ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের আরেক প্রান্তে ফের এক মহিলার সম্মানহানির অভিযোগ উঠেছে ৷ যেখানে পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে মহিলাকে বিবস্ত্র করে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ৷ গত শুক্রবারের এই ঘটনায় নিগৃহীতা এবং তাঁর স্বামী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন শনিবার ৷ কিন্তু, ওইদিন রাতে নিগৃহীতার বাড়িতে হামলা চালান অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী এবং তাঁর লোকজন ৷
মহিলার স্বামী অভিযোগ করেছেন, "তৃণমূল কর্মী হুমকি দিয়েছেন, 'এফআইআর প্রত্যাহার না-করলে আরজি করের পুনরাবৃত্তি হবে' ৷" এই হুমকি ও ভাঙচুরের ঘটনায় ফের থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, তারা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ৷ উল্লেখ্য, মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীর মাথায় মালদা জেলার এক শীর্ষনেতার হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন নিগৃহীতা মহিলার স্বামী ৷
তিনি অভিযোগে জানিয়েছেন, "আবর্জনা ফেলা নিয়ে এই বিবাদের সূত্রপাত হয় ৷ গত 5 সেপ্টেম্বর আমার ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে আবর্জনা ফেলা নিয়ে অশান্তি হয় ৷ সেই সময় আমার ভাইয়ের বউ ওকে খুনের হুমকি দেয় ৷ পরেরদিন সন্ধেয় আমি বাইরে ছিলাম ৷ সেই সময় ভ্রাতৃবধূর ভাই আর বাবা আমাদের বাড়িতে আসেন ৷ আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন ৷ প্রতিবাদ জানালে তাঁরা আমার স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর করেন ৷ গোটা ঘটনা জানিয়ে 7 সেপ্টেম্বর আমার স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ৷"
তিনি অভিযোগ করেছেন, "অভিযোগ দায়ের হওয়ার খবর পেয়ে সেদিনই সন্ধে সাতটা নাগাদ তিন দুষ্কৃতী আমাদের বাড়িতে চড়াও হয় ৷ আমাদের ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ৷ স্ত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেয় ৷ বলে যায়, থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার না-করা হলে, আমার স্ত্রীর আরজি করের মতো পরিণতি হবে ৷ দুর্ভাগ্যবশত সেদিনও আমি বাড়ির বাইরে ছিলাম ৷ আতঙ্কে আমার স্ত্রী কোনওরকমে দরজা বন্ধ করে, নিজেকে বাঁচায় ৷ এ নিয়ে গতকাল ফের থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ কিন্তু, পুলিশ এখনও পর্যন্ত পদক্ষেপ করেনি ৷ আমরা বেশ ভয়ে রয়েছি ৷"
এনিয়ে এলাকার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জানাচ্ছেন, "যদি অভিযোগ সত্যি হয় এবং ওই মহিলা পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন, তবে পুলিশকে বলব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷ যে বা যারা এই কাজ করেছে, তিনি তৃণমূলের কর্মীই হোক বা বড় নেতা, তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না ৷" ঘটনা প্রসঙ্গে এসডিপিও জানিয়েছেন, "গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে ৷"