ETV Bharat / state

আদর্শ গ্রামের স্বপ্ন অধরা ! 'দত্তক নিয়েও কিছুই করেননি বিজেপি সাংসদ', কাঠগড়ায় শাসকদল ? - Adopted village of BJP MP

Adopted village of BJP MP: জলপাইগুড়ির দত্তক নেওয়া গ্রামে বিজেপি সাংসদ কোনও কাজই করেননি বলে অভিযোগ ৷ তবে বিজেপি কাঠগড়ায় তুলেছে শাসকদলকে ৷ দোষারোপ ও পালটা দোষারোপে আদর্শ গ্রামের স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 14, 2024, 8:14 PM IST

Updated : Mar 15, 2024, 1:56 PM IST

আদর্শ গ্রামের স্বপ্ন অধরা

জলপাইগুড়ি, 14 মার্চ: দত্তক নেওয়া গ্রামে কোনও কাজই করেননি সাংসদ, অভিযোগ সেরকমই ৷ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডা. জয়ন্তকুমার রায় সাংসদ হওয়ার পর একটি গ্রামকে দত্তক নিয়েছিলেন । স্থানীয়দের অভিযোগ গোটা গ্রামকে দত্তক নেওয়ার পর সেই গ্রামের জন্য কোনও কাজই করেননি সাংসদ ৷ কিন্তু সাংসদের দাবি, শাসকদল ও স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত তাঁকে কোনও কাজই করতে দেয়নি । শুধু তাই নয়, কাজ করার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি । যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা আবার দাবি করেছেন যে, সাংসদ কোনও কাজই করেননি । বাধা দেওয়ার প্রশ্নই নেই । উন্নয়ন হলে গ্রামেরই উন্নয়ন হত । শাসক ও বিরোধী শিবিরের তরজায় আপাতত শিকেয় গ্রামের উন্নয়ন ৷

জলপাইগুড়ি জেলায় ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই গ্রামপঞ্চায়েতের চ্যাংমারির 16/5 ও 16/6 নং বুথকে আদর্শ গ্রাম করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাংসদ জয়ন্তকুমার রায় গ্রামটিকে দত্তক নিয়েছিলেন । কিন্তু সাংসদ হওয়ার পর কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া সেখানে কিছুই করা হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের ।

স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল রায় বলেন, "সাংসদ তো বলেছিলেন আমাদের গ্রামকে আদর্শ গ্রাম করে দেবেন । কিন্তু করতে পারেননি । কেন করতে পারলেন না জানি না । আমরা সাধারণ মানুষ । গ্রামের উন্নতি হলে আমাদের সবারই ভালো হত । আদর্শ গ্রাম করতে চাইলেন, কোথায় আদর্শ গ্রাম । কোনও কাজ না করে সামনের ভোটে আবারও ভোট চাইতে আসবে ।"

আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা সুশীল খড়িয়া বলেন, "সাংসদ দত্তক নিয়েছিলেন আমাদের চ্যাংমারি গ্রামকে । কিন্তু কোনও উন্নয়নই হয়নি । সাংসদ কিছুই করেননি । দত্তক নিয়েছেন শুনেছি, তাই ভেবেছিলাম মালিপাড়ার সেতু হবে । রাস্তাঘাট খারাপ । পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই । রাস্তাঘাট হলে ভালোই হত । আমরা উন্নয়ন চাই ।"

সাংসদের দত্তক নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা চন্দনা রায় ওড়াওয়ের কথায়, "কাজ করার সুযোগ নেই । রাস্তাঘাটে চলাও যায় না । শৌচাগার নেই । কীসের জন্য কাজ করেনি সেটা জানি না । এখানে আসে কিন্তু কাজ করে না ।"

যদিও যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডা. জয়ন্তকুমার রায় ৷ তিনি জানান, "আদর্শ গ্রামে বেশ কয়েকবার গেলাম । কী কী করা যেতে পারে তা দেখার জন্য সার্ভে করা হল । গ্রামের মানুষের কী চাহিদা আছে তার সার্ভে করল আমার টিম । কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেখানকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতার স্ত্রী উপপ্রধান, তিনি কোনওভাবেই কাজ করতে দিলেন না । অনেক বুঝিয়েছিলাম । ওই গ্রামের এক কিলোমিটারের মধ্যেই আমার নিজের গ্রামের বাড়ি । আদর্শ গ্রাম হোক আমি এটা চেয়েছিলাম । আমি তো সেখানে থাকব না । সেখানে তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপি আইএম সবাই থাকবে । আদর্শ গ্রামের উন্নয়ন হলে সবার উন্নয়ন হবে । বলেছিলাম, এর মধ্যে রাজনীতি আনবেন না। আমি সব প্রজেক্ট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি । আমি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ । আমি তাই গ্রামে গিয়ে সবাইকে বলেছি আমাকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি । কে কাজ করতে দেয়নি তাঁকে নিয়ে এসে শুনুন কাজ কেন করতে দেয়নি । গ্রামের মানুষ বিষয়টা বুঝেছেন ।"

স্থানীয় বাসিন্দা নিশিকান্ত বিশ্বাসও বলেন, "এখানকার প্রধান কোনও অনুমতি দেননি বলেই আদর্শ গ্রাম করা যায়নি বলে জানতে পেরেছি । কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া কিছুই করা হয়নি । সাংসদ এসেছিলেন, এখানে সবাইকে নিয়ে আলোচনাও হয় । সে দিন তিনি বলেন, আমাকে কাজ না করতে দিলে টাকাগুলো কোথায় খরচ করব । 2400 সোলার লাইটও বসাতে দিল না । আদর্শ গ্রাম করতে না দিলে তিনি কী করতে পারেন ! দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থা ।"

রাজ্যের শাসকদল তাঁকে কাজ করতে দেয়নি বলে সাংসদ যে অভিযোগ করেছেন, তা উড়িয়ে দিয়েছেন রামশাই গ্রামপঞ্চায়েতের চ্যাংমারি গ্রামের 16/5 নং বুথের পঞ্চায়েত সদস্যা রূমা রায় অধিকারী । তাঁর দাবি, বাধা কেউ দেয়নি ৷ গ্রামের উন্নয়ন হলে সবারই ভালো হবে । তিনি বলেন, "সাংসদ আমাদের গ্রামকে আদর্শ গ্রাম করবে বলেছিলেন কিন্তু করেননি । রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি । সেতু হয়নি । জলের সমস্যার সমাধান হয়নি । রাস্তাঘাট বেহাল । একটি রাস্তা আমিই করেছি পথশ্রীর প্রকল্পের মাধ্যমে । কিন্তু কিছুই করেননি সাংসদ ।"

আরও পড়ুন:

  1. পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, কটাক্ষ বিরোধীদের
  2. 'অভিষেকের দুটো বাচ্চা আছে, খাওয়াবে কেমন করে?' সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নিয়ে সরব মমতা
  3. সিএএ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন মমতা, আক্রমণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

আদর্শ গ্রামের স্বপ্ন অধরা

জলপাইগুড়ি, 14 মার্চ: দত্তক নেওয়া গ্রামে কোনও কাজই করেননি সাংসদ, অভিযোগ সেরকমই ৷ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডা. জয়ন্তকুমার রায় সাংসদ হওয়ার পর একটি গ্রামকে দত্তক নিয়েছিলেন । স্থানীয়দের অভিযোগ গোটা গ্রামকে দত্তক নেওয়ার পর সেই গ্রামের জন্য কোনও কাজই করেননি সাংসদ ৷ কিন্তু সাংসদের দাবি, শাসকদল ও স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত তাঁকে কোনও কাজই করতে দেয়নি । শুধু তাই নয়, কাজ করার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি । যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা আবার দাবি করেছেন যে, সাংসদ কোনও কাজই করেননি । বাধা দেওয়ার প্রশ্নই নেই । উন্নয়ন হলে গ্রামেরই উন্নয়ন হত । শাসক ও বিরোধী শিবিরের তরজায় আপাতত শিকেয় গ্রামের উন্নয়ন ৷

জলপাইগুড়ি জেলায় ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই গ্রামপঞ্চায়েতের চ্যাংমারির 16/5 ও 16/6 নং বুথকে আদর্শ গ্রাম করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাংসদ জয়ন্তকুমার রায় গ্রামটিকে দত্তক নিয়েছিলেন । কিন্তু সাংসদ হওয়ার পর কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া সেখানে কিছুই করা হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের ।

স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল রায় বলেন, "সাংসদ তো বলেছিলেন আমাদের গ্রামকে আদর্শ গ্রাম করে দেবেন । কিন্তু করতে পারেননি । কেন করতে পারলেন না জানি না । আমরা সাধারণ মানুষ । গ্রামের উন্নতি হলে আমাদের সবারই ভালো হত । আদর্শ গ্রাম করতে চাইলেন, কোথায় আদর্শ গ্রাম । কোনও কাজ না করে সামনের ভোটে আবারও ভোট চাইতে আসবে ।"

আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা সুশীল খড়িয়া বলেন, "সাংসদ দত্তক নিয়েছিলেন আমাদের চ্যাংমারি গ্রামকে । কিন্তু কোনও উন্নয়নই হয়নি । সাংসদ কিছুই করেননি । দত্তক নিয়েছেন শুনেছি, তাই ভেবেছিলাম মালিপাড়ার সেতু হবে । রাস্তাঘাট খারাপ । পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই । রাস্তাঘাট হলে ভালোই হত । আমরা উন্নয়ন চাই ।"

সাংসদের দত্তক নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা চন্দনা রায় ওড়াওয়ের কথায়, "কাজ করার সুযোগ নেই । রাস্তাঘাটে চলাও যায় না । শৌচাগার নেই । কীসের জন্য কাজ করেনি সেটা জানি না । এখানে আসে কিন্তু কাজ করে না ।"

যদিও যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডা. জয়ন্তকুমার রায় ৷ তিনি জানান, "আদর্শ গ্রামে বেশ কয়েকবার গেলাম । কী কী করা যেতে পারে তা দেখার জন্য সার্ভে করা হল । গ্রামের মানুষের কী চাহিদা আছে তার সার্ভে করল আমার টিম । কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেখানকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতার স্ত্রী উপপ্রধান, তিনি কোনওভাবেই কাজ করতে দিলেন না । অনেক বুঝিয়েছিলাম । ওই গ্রামের এক কিলোমিটারের মধ্যেই আমার নিজের গ্রামের বাড়ি । আদর্শ গ্রাম হোক আমি এটা চেয়েছিলাম । আমি তো সেখানে থাকব না । সেখানে তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপি আইএম সবাই থাকবে । আদর্শ গ্রামের উন্নয়ন হলে সবার উন্নয়ন হবে । বলেছিলাম, এর মধ্যে রাজনীতি আনবেন না। আমি সব প্রজেক্ট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি । আমি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ । আমি তাই গ্রামে গিয়ে সবাইকে বলেছি আমাকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি । কে কাজ করতে দেয়নি তাঁকে নিয়ে এসে শুনুন কাজ কেন করতে দেয়নি । গ্রামের মানুষ বিষয়টা বুঝেছেন ।"

স্থানীয় বাসিন্দা নিশিকান্ত বিশ্বাসও বলেন, "এখানকার প্রধান কোনও অনুমতি দেননি বলেই আদর্শ গ্রাম করা যায়নি বলে জানতে পেরেছি । কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া কিছুই করা হয়নি । সাংসদ এসেছিলেন, এখানে সবাইকে নিয়ে আলোচনাও হয় । সে দিন তিনি বলেন, আমাকে কাজ না করতে দিলে টাকাগুলো কোথায় খরচ করব । 2400 সোলার লাইটও বসাতে দিল না । আদর্শ গ্রাম করতে না দিলে তিনি কী করতে পারেন ! দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থা ।"

রাজ্যের শাসকদল তাঁকে কাজ করতে দেয়নি বলে সাংসদ যে অভিযোগ করেছেন, তা উড়িয়ে দিয়েছেন রামশাই গ্রামপঞ্চায়েতের চ্যাংমারি গ্রামের 16/5 নং বুথের পঞ্চায়েত সদস্যা রূমা রায় অধিকারী । তাঁর দাবি, বাধা কেউ দেয়নি ৷ গ্রামের উন্নয়ন হলে সবারই ভালো হবে । তিনি বলেন, "সাংসদ আমাদের গ্রামকে আদর্শ গ্রাম করবে বলেছিলেন কিন্তু করেননি । রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি । সেতু হয়নি । জলের সমস্যার সমাধান হয়নি । রাস্তাঘাট বেহাল । একটি রাস্তা আমিই করেছি পথশ্রীর প্রকল্পের মাধ্যমে । কিন্তু কিছুই করেননি সাংসদ ।"

আরও পড়ুন:

  1. পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, কটাক্ষ বিরোধীদের
  2. 'অভিষেকের দুটো বাচ্চা আছে, খাওয়াবে কেমন করে?' সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নিয়ে সরব মমতা
  3. সিএএ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন মমতা, আক্রমণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
Last Updated : Mar 15, 2024, 1:56 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.