কলকাতা, 3 ডিসেম্বর: নিউ মার্কেট চত্ত্বরে হকার আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফের দেদার পিচ রাস্তা জুড়ে চলছে হকারি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রকাশের পরেও কীভাবে এত বেপরোয়া মনোভাব বেআইনি হকারদের? এই প্রশ্ন তুলে টাউন ভেন্ডিং কমিটি নিউ মার্কেট থানাকে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল গত বৃহস্পতিবার।
বেআইনি হকারদের এই 72 ঘণ্টায় সরিয়ে ফেলতে হবে। সেই সময় কেটেছে। তারপরেও এদিন বহাল তবিয়তে পিচ রাস্তার দখল নিয়ে হাকরি করছে একাংশ হকার। আর সেই তথ্য প্রমাণ হাতে নিয়েই পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে মদত দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন টিভিসি সদস্য হকার সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ। তার দাবি পুলিশের মদত আছে। লাখ লাখ টাকার খেলা। পুলিশ অভিযান আসলে নাটক। তিনি আজ ফের কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বেআইনি হকার তোলা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
নিউ মার্কেট চত্বরে বারট্রাম স্ট্রিট, হুমায়ূন প্যালেস, লিন্ডসে স্ট্রিট-সহ আশপাশের গোটা এলাকায় সার্ভে করে উঠে এসেছে হকার সংখ্যা 2000-এর বেশি। তবে তাদের বাদ দিলেও এই মুহূর্তে পিচ রাস্তা দখল করে বসে রয়েছেন প্রায় 500-600 হকার, যাঁরা হকার আইনের তোয়াক্কা করছেন না। এই বিপুল সংখ্যক হকারের বেপরোয়া মনোভাবের পিছনে কার মদত উঠছে প্রশ্ন।
টিভিসির সদস্য তথা হকার সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, মেয়র এমনকি হকার বিষয়ক দায়িত্বে থাকা মেয়র পরিষদ দেবাশিস কুমার বলেছেন। তারপরেও নিউ মার্কেটের ছবি পরিবর্তন হচ্ছে না। হকার আইন অনুসারে পিচ রাস্তা হকার বসা বেআইনি। তবে এই নিউ মার্কেট চত্ত্বরে প্রায় 500-600 বেআইনি এমন হাকর ব্ল্যাকটপ দখল করে বসে। আমরা টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পুলিশকে আমরা জানিয়েছিলাম তিন দিনের মধ্যে এই বেআইনি হকারদের তুলে ফেলার জন্য। তবে তিনদিন পরেও ছবিটা বদল হয়নি। আসলে লাখ লাখ টাকার খেলা এখানে। পুলিশ আমাদের চাপে পড়ে লোক দেখানো উচ্ছেদ করছে ৷ আমরা ভিডিয়ো করে রেখেছি পুলিশি অভিযানের পর মিনিট 20-30 গেলেই ফের সেই জায়গায় এসে বসে পড়ছেন হকাররা।"
তিনি বলেন, "এখানে যে সমস্ত হকার সংগঠন রয়েছে, তারা প্রত্যেকেই হকার আইন মেনেই ব্যবসা করার পক্ষে । ফলে তারা কেউই পিচ রাস্তা দখল করে হকারি করায় মদত দেয় না। যারা মদত দিচ্ছে, তারা হল স্থানীয় থানা । আমি এই বিষয় নিয়ে আজ ফের কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে আবেদন করব, যাতে নিউ মার্কেটে বেআইনি হকার মুক্ত করা হয়। পাশাপাশি, পুলিশের ভূমিকাকেও তুলে ধরব তার কাছে। এখানে কাজ না হলে রাজ্য প্রশাসনের কাছে জনাব ।"
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিউ মার্কেটে হকার বসানো নিয়ে শাসক দলের দুই সংগঠনের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এক পক্ষের নেতাদের মারধর করা হয়। পাল্টা তারা নিউ মার্কেট উল্টো ফুট দখল করে থাকা ইউনিয়নের লোকজনের বসার জায়গা ভাংচুর চালায়। মূলত টাকার বখরা এলাকার দখল নিয়েই ছিল সেই ঝামেলা। সামাল দিতে নিউ মার্কেট থানাকে ময়দানে নামতে হয়েছিল। যদিও হকার সংগঠনগুলি সেই ঝামেলার দায় কেউ নিজের কাঁধে নেননি।