ETV Bharat / state

মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ছে সাগরদ্বীপ, প্রায় 1439 কোটি ব্যয়ে হচ্ছে মুড়িগঙ্গা সেতু - MURI GANGA BRIDGE

সাড়ে 4 বছরের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু ৷ 1439 কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করবে রাজ্য সরকার ।

Muri ganga Bridge
খুব শীঘ্র তৈরি হতে চলেছে মুড়িগঙ্গা সেতু (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 10, 2024, 3:04 PM IST

গঙ্গাসাগর, 10 ডিসেম্বর: স্বাধীনতার 77 বছর পর এবার স্থলভাগের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে চলেছে সাগরদ্বীপ । মুড়িগঙ্গা নদীর উপর চার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার । টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই খুশির জোয়ার গঙ্গাসাগর জুড়ে ।

রাজ্যের পূর্তদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে 4 বছরের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু ৷ প্রায় 1439 কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করবে রাজ্য সরকার । পূর্তদফতর ইতিমধ্যেই 1469 দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দরপত্র জারি করেছে ।

প্রায় 1439 কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হবে মুড়িগঙ্গা সেতু (ইটিভি ভারত)

নতুন সেতুটি হবে চার লেনের এবং নির্মাণ শেষ হওয়ার পর টানা 10 বছর নির্মাণকারী সংস্থার উপরই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে । ইতিমধ্যেই সেতু তৈরির জন্য প্রায় দেড়শো বাসিন্দার কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) সংগ্রহ করেছে জেলা প্রশাসন । জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণও নির্ধারণ করা হয়েছে ।

এই বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, "গঙ্গাসাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে তৈরি হচ্ছে 5 কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু । 1438 কোটি 62 লক্ষ 34 হাজার 654 টাকা ব্যয়ে মুড়িগঙ্গা নদীতে তৈরি হতে চলেছে এই সেতু । ইতিমধ্যেই এই সেতুর টেন্ডার হয়ে গিয়েছে । সেতুর নির্মাণ কাজ সাড়ে 4 বছর ৷ 1469 দিনের মধ্যে তা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এই ব্রিজ দীর্ঘদিন ধরে সাগরদ্বীপবাসীর দাবি ছিল ৷ সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে ৷"

ভেসেলে নদী পার হওয়ার জন্য আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না । 2029 সালের জানুয়ারি মাসে গঙ্গাসাগর মেলায় অংশগ্রহণকারী পুণ্যার্থীরা কলকাতা থেকে সরাসরি সেতু দিয়ে গাড়ি নিয়ে কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে ।

প্রসঙ্গত, এই সেতু তৈরির দায়িত্ব প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের ছিল । প্রায় ছয় বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাজপুর বন্দরের অংশীদারিত্বের পরিবর্তে কেন্দ্র এই সেতুটি নির্মাণ করুক । যদিও কেন্দ্র প্রস্তাবে সম্মত হলেও শেষ পর্যন্ত কার্যকর করেনি বলে অভিযোগ । অবশেষে, সাগরদ্বীপের বাসিন্দা এবং গঙ্গাসাগর মেলায় আগত কোটি কোটি পুণ্যার্থীর কথা মাথায় রেখে রাজ্য নিজেই এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় । গত বিধানসভা নির্বাচনী প্রচার ও গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেতু নির্মাণের ঘোষণা করেছিলেন ।

রাজ্যের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প । তিনি আগামী গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শনের সময় এর শিলান্যাসও করতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে । এই সেতু নির্মাণ হলে সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা যেমন সহজে মূল ভুখণ্ডে পৌঁছতে পারবেন, তেমনই গঙ্গাসাগর মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের ভ্রমণও অনেক স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে । সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সাগরদ্বীপের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রগতি অনেকটাই ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

সুদীপ হালদার নামে এক এলাকাবাসী বলেন, "প্রায় সময় মুড়িগঙ্গা নদীতে জোয়ার ভাটা এবং পলি জমে যাওয়ার কারণে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ থাকে । ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় তীর্থযাত্রীদের ও এলাকাবাসীদের । যদি মুড়িগঙ্গা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হয়ে যায়, তাহলে সাগরদ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন । খুব সহজে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে রোগী থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা অতি সহজে সাগর থেকে কাকদ্বীপে চলে আসতে পারবে । এতে সময়ও অনেক কম লাগবে এবং মানুষ উপকৃত হবে ।"

নিত্য ভেসেল যাত্রী সুকুমার ভুঁইয়ার কথায়, "মুড়িগঙ্গা নদীতে ব্রিজ হয়ে গেলে সাগরদ্বীপের মানুষেরা খুব সহজে কাকদ্বীপে পৌঁছবে । আর এর ফলে যাতায়াত ব্যবস্থা যেমন উন্নত হবে, তেমনই সাগরদ্বীপের মানুষদের সুবিধা হবে । এছাড়াও মুড়িগঙ্গা নদীতে জোয়ার ভাটার উপর আর ভরসা করে তীর্থযাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে না । অতি সহজে কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর চলে আসতে পারবে তারা ৷"

গঙ্গাসাগর, 10 ডিসেম্বর: স্বাধীনতার 77 বছর পর এবার স্থলভাগের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে চলেছে সাগরদ্বীপ । মুড়িগঙ্গা নদীর উপর চার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার । টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই খুশির জোয়ার গঙ্গাসাগর জুড়ে ।

রাজ্যের পূর্তদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে 4 বছরের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু ৷ প্রায় 1439 কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করবে রাজ্য সরকার । পূর্তদফতর ইতিমধ্যেই 1469 দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দরপত্র জারি করেছে ।

প্রায় 1439 কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হবে মুড়িগঙ্গা সেতু (ইটিভি ভারত)

নতুন সেতুটি হবে চার লেনের এবং নির্মাণ শেষ হওয়ার পর টানা 10 বছর নির্মাণকারী সংস্থার উপরই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে । ইতিমধ্যেই সেতু তৈরির জন্য প্রায় দেড়শো বাসিন্দার কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) সংগ্রহ করেছে জেলা প্রশাসন । জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণও নির্ধারণ করা হয়েছে ।

এই বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, "গঙ্গাসাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে তৈরি হচ্ছে 5 কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু । 1438 কোটি 62 লক্ষ 34 হাজার 654 টাকা ব্যয়ে মুড়িগঙ্গা নদীতে তৈরি হতে চলেছে এই সেতু । ইতিমধ্যেই এই সেতুর টেন্ডার হয়ে গিয়েছে । সেতুর নির্মাণ কাজ সাড়ে 4 বছর ৷ 1469 দিনের মধ্যে তা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এই ব্রিজ দীর্ঘদিন ধরে সাগরদ্বীপবাসীর দাবি ছিল ৷ সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে ৷"

ভেসেলে নদী পার হওয়ার জন্য আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না । 2029 সালের জানুয়ারি মাসে গঙ্গাসাগর মেলায় অংশগ্রহণকারী পুণ্যার্থীরা কলকাতা থেকে সরাসরি সেতু দিয়ে গাড়ি নিয়ে কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে ।

প্রসঙ্গত, এই সেতু তৈরির দায়িত্ব প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের ছিল । প্রায় ছয় বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাজপুর বন্দরের অংশীদারিত্বের পরিবর্তে কেন্দ্র এই সেতুটি নির্মাণ করুক । যদিও কেন্দ্র প্রস্তাবে সম্মত হলেও শেষ পর্যন্ত কার্যকর করেনি বলে অভিযোগ । অবশেষে, সাগরদ্বীপের বাসিন্দা এবং গঙ্গাসাগর মেলায় আগত কোটি কোটি পুণ্যার্থীর কথা মাথায় রেখে রাজ্য নিজেই এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় । গত বিধানসভা নির্বাচনী প্রচার ও গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেতু নির্মাণের ঘোষণা করেছিলেন ।

রাজ্যের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প । তিনি আগামী গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শনের সময় এর শিলান্যাসও করতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে । এই সেতু নির্মাণ হলে সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা যেমন সহজে মূল ভুখণ্ডে পৌঁছতে পারবেন, তেমনই গঙ্গাসাগর মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের ভ্রমণও অনেক স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে । সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সাগরদ্বীপের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রগতি অনেকটাই ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

সুদীপ হালদার নামে এক এলাকাবাসী বলেন, "প্রায় সময় মুড়িগঙ্গা নদীতে জোয়ার ভাটা এবং পলি জমে যাওয়ার কারণে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ থাকে । ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় তীর্থযাত্রীদের ও এলাকাবাসীদের । যদি মুড়িগঙ্গা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হয়ে যায়, তাহলে সাগরদ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন । খুব সহজে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে রোগী থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা অতি সহজে সাগর থেকে কাকদ্বীপে চলে আসতে পারবে । এতে সময়ও অনেক কম লাগবে এবং মানুষ উপকৃত হবে ।"

নিত্য ভেসেল যাত্রী সুকুমার ভুঁইয়ার কথায়, "মুড়িগঙ্গা নদীতে ব্রিজ হয়ে গেলে সাগরদ্বীপের মানুষেরা খুব সহজে কাকদ্বীপে পৌঁছবে । আর এর ফলে যাতায়াত ব্যবস্থা যেমন উন্নত হবে, তেমনই সাগরদ্বীপের মানুষদের সুবিধা হবে । এছাড়াও মুড়িগঙ্গা নদীতে জোয়ার ভাটার উপর আর ভরসা করে তীর্থযাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে না । অতি সহজে কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগর চলে আসতে পারবে তারা ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.