বহরমপুর, 12 নভেম্বর: রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পকে রীতিমতো ‘দুঃস্বপ্নে’ পরিণত করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা শিক্ষা দফতর । সালারের টেয়া এসএসডি বিদ্যামন্দিরের 14 জন পড়ুয়ার ট্যাব কেনার টাকা চলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে । জেলার 4841 জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে দু’বার টাকা পাঠিয়েছে শিক্ষা দফতর । সেই টাকা ফেরত চেয়ে ব্যাঙ্কের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিদ্যালয় পরিদর্শক (সেকেন্ডারি) অমরকুমার শীল ।
জেলার বহু পড়ুয়া ট্যাবের টাকা না-পেয়ে রীতিমতো শিক্ষা দফতরকে দুষছে । পড়ুয়ারা টাকা না-পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে সালারের স্কুল কর্তৃপক্ষ । ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অলকনাথ দে বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের টাকা না-পাওয়ার বিষয়টি থানা, বিডিও ও স্কুল শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি । জানি না কবে টাকা ঢুকবে ।’’ জানা গিয়েছে, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের দু’বার করে ট্যাবের টাকা পাঠানো হয়েছে । যার ফলে 4 কোটি 84 লক্ষ টাকা বাড়তি দেওয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ । এই টাকা আদৌ কতটা উদ্ধার করতে পারবে শিক্ষা দফতর, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে ।
বিস্তর গরমিলের অভিযোগ সামনে আসতেই মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলা শিক্ষা দফতর । বহরমপুরের শিক্ষা ভবনে গিয়ে বারবার বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি দেখা করেননি । তিনি ফোনে জানিয়েছেন, ট্যাব বিষয়ক কোনও ব্যাপারে আমার কোনও বক্তব্য নেই । যদিও জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কাছে এই গরমিলের কথা স্পষ্ট জানিয়েছেন স্কুল পরিদর্শক । জেলার 17টি ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কাছে চিঠি দিয়ে টাকা আটকানোর জন্য আবেদনও জানিয়েছেন তিনি ।
|
জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা হয়েছে । সালারের 14 জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি বলে আমরা জেনেছি । তাদের টাকা বিহারের ভাগলপুরের বেশ কিছু অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে । জেলার মোট 4841 জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে দু’বার টাকা ঢুকেছে । সেই টাকা হোল্ড করার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে বলা হয়েছে । মঙ্গলবার ব্যাঙ্কের তরফে স্টেটাস পাওয়া যাবে । তবে কেউ যদি টাকা পেয়েই তুলে নেয় সেক্ষেত্রে টাকা আদায়ে সমস্যা হবে ।’’
সালারের টেয়া এসএসডি বিদ্যামন্দিরের এক পড়ুয়ার অভিভাবক বলেন, ‘‘জেলা শিক্ষা দফতরের গাফিলতি ছাড়া এটা তো হওয়া সম্ভব না । আমরা ট্যাবের টাকা পেলাম না ৷ অথচ কেউ কেউ 10 হাজার টাকার বদলে 20 হাজার টাকা পেয়ে গেল । এই টাকা কখনই সহজে শিক্ষা দফতর আদায় করতে পারবে বলে মনে হয় না ।’’