কলকাতা, 15 জুন: এবার রাজভবনের উলটোদিকে ধরনায় বসতে চান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ শনিবার কোচবিহার যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি এই কথা বলেছেন ৷ জানিয়েছেন, ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে তিনি সেখানে ধরনায় বসতে চান ৷ এ দিন তিনি বলেন, ‘‘যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসকে 5 দিন ধরনার অনুমতি পুলিশ দিয়েছিল, সেখানেই ধরনায় বসার জন্য চিঠি দিয়েছি । পুলিশ কমিশনার এখনও উত্তর দেননি । আমি মঙ্গলবার আবার রিমাইন্ডার দেব ।’’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে ও ঘরছাড়াদের রাজভবনে ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ ৷ এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ আদালত জানায়, শুভেন্দু অধিকারী চাইলে যেতে পারেন ৷ তবে তাঁকে আগে বিস্তারিত তথ্য রাজভবনে জানাতে হবে ৷
এই প্রসঙ্গে এ দিন বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘মহামান্য রাজ্যপাল নিয়ে গতকালের রায় জানেন । আগামিকাল যদি ওঁর সময় হয়, আমি 100 জন আক্রান্তকে নিয়ে দেখা করব ।’’ এই নিয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘(আদালত) অনুমতি নিতে বলেনি । জানাতে বলেছে । রাজভবন অনুমতি দিলেই যাব ।’’ রাজভবনে হয়তো যেতে পারবেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ কিন্তু তার উলটোদিকে ধরনায় বসার অনুমতি কি পাবেন ? এই নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাইরে ধরনায় বসতে পুলিশের অনুমতি লাগবে । তৃণমূলকে দিয়েছে তো । আমাদের দেবে না কেন ?’’
একই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘জোর করে পঞ্চায়েতগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে । কোচবিহারে একাধিক পঞ্চায়েতে গায়ের জোরে তালা লাগানো হয়েছে । প্রধানদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না । আমি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছি । দক্ষিণ 24 পরগনার মথুরাপুর 2 ব্লকের কাশীপুর পঞ্চায়েত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী কিভাবে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তৃণমূলের পতাকা লাগাচ্ছে ৷ এই সময় বিজেপির কর্মীদের পাশে আমাদের থাকতে হবে ।’’ সেই কারণে তিনি রাজ্যের সব জায়গায় যাবেন বলে জানিয়েছেন ৷
শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এতগুলো রাজ্যে ভোট হয়েছে । জয় পরাজয় হয়েছে । কোনও রাজ্য থেকে কোনও রিপোর্ট নেই । অন্ধ্রপ্রদেশে কয়েকটি ঘটনা ছাড়া । কেন এই রাজ্যে কয়েক হাজার লোক বাড়ির বাইরে থাকবে ? কেন হাসপাতালে থাকবে ? কেন বলছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গেলে দেখে নেব ? মারব ? পঞ্চায়েতগুলো দখল করা হচ্ছে ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি কোচবিহারে যাচ্ছি ৷ সেখানে পার্টি অফিসে 270 জন ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী আছেন । আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা করব । জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে চাইব । হয়তো উনি দেখা করবেন না । আমি সাংবাদিক বৈঠকে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানাব ৷’’ তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস যেমন প্রায় 45 শতাংশ ভোট পেয়ে গরিষ্ঠ সংখ্যক আসনে জিতেছে, তেমনই বিজেপিও প্রায় 39 শতাংশ ভোট পেয়ে 2 কোটি 33 লক্ষ মানুষের সমর্থন পেয়েছে ৷’’
অন্যদিকে আবাস প্লাস যোজনার টাকা দেওয়া নিয়ে নবান্নের তরফে ফের সমীক্ষার নির্দেশ সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই বছর ওরা যা ঋণ নেওয়ার নিয়ে নিয়েছে । আর নেওয়ার সুযোগ নেই । তাই ভোটের আগে এক বলে আর ভোটের পরে এক । 21 এর আগেও বলেছিল ডাবল ডাবল চাকরি হবে । মোদি ভ্যাকসিন নেব না । কিনে নেব ।’’
কুণালের ঘোষের বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীর জবাব, ‘‘কুণাল ঘোষের কথার উত্তর দিই না । উনি মহান ব্যক্তি । আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তি ।’’