কলকাতা, 3 সেপ্টেম্বর: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের 'সংখ্যা'র ঔদ্ধত্য ৷ একসময় এই 'সংখ্যা'র ঔদ্ধত্যই পতনের কারণ হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারের ৷ আজ বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে, এমনই মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ যেখানে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করলেন, 2006 সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বক্তব্যের অংশকে ৷
এ দিন বিধানসভায় বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ তিনি বলেন, "গতকাল থেকে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে অবস্থানে রয়েছেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ ওদের দাবি কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ ৷ উনি না-হয় পদত্যাগ করবেন না ৷ কিন্তু, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিপত্রটাও গিয়ে হাতে নিতে পারছেন না বিনীত গোয়েল ? উনি পাঁচ হাজার পুলিশ নিয়েও যেতে পারছেন না ধরনা স্থলে ৷"
এরপরেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যের অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু ৷ তিনি বলেন, "এই ঔদ্ধত্য কীসের ? এই সংখ্যার (তৃণমূল বিধায়কদের দেখিয়ে) ? বিধানসভায় সংখ্যার ঔদ্ধত্য় ! জেনে রাখবেন গণতন্ত্রে বিধানসভার সংখ্যা শেষ কথা নয় ৷ শেষ কথা বলেন জনগণ ৷ 2006 সালে বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, 'আমরা 235 আর ওরা মাত্র 30 জন ৷ ওই তিরিশ জনে আমিও ছিলাম ৷ ওই অহংকার ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল' ৷" একই সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেন ৷ তিনি স্লোগান তোলেন, ‘দফা এক দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্য়াগ’ ৷
পাশাপাশি, তড়িঘড়ি 'অপরাজিতা ওম্যান অ্যান্ড চাইল্ড বিল 2024' পেশ করার অভিযোগও করেছেন শুভেন্দু ৷ তবে, এর জন্য সরকার যে নিয়মবিধি মানেননি তার বিরোধিতা তাঁর বিধায়করা করবেন না বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা ৷ তবে শর্ত একটাই, দ্রুত এই বিলকে আইনে পরিণত করে কার্যকর করতে হবে ৷ সেই শর্তেই আজ বিলে সমর্থন দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা ৷
শুভেন্দু ধর্ষণ বিরোধী এই বিলকে সমর্থনের কথা বললেও, মমতা সরকারকে নিশানা করতে ছাড়েননি ৷ তিনি বলেন, "গত 9 অগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালে 36 ঘণ্টা ডিউটি করার পর যে নির্যাতনের শিকার চিকিৎসক পড়ুয়াকে হতে হয়েছে, তার বিরুদ্ধে রাজ্য, দেশ এমনকি বিদেশেও নিন্দার ঝড় উঠেছে ৷ আমাদের শত্রু দেশ পাকিস্তানের ডাক্তারদের সংগঠন বিবৃতি দিয়ে এই ঘটনার নিন্দা করেছেন ৷ এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই ৷ মানুষ রাস্তায় নেমেছে, জনরোষ ও গণ আন্দোলন তৈরি হয়েছে ৷ সরকার এসবের থেকে বেরিয়ে আসতে ও মূল্য ইস্যু থেকে ফোকাস সরাতে তড়িঘড়ি এই বিল পেশ করছে ৷"