কলকাতা, 14 জুলাই: রাজ্যে ডিস্টার্বড এরিয়াস অ্যাক্ট বা উপদ্রুত এলাকা আইন লাগুর দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । রাজভবনের সামনের ধরনা মঞ্চ থেকে রবিবার তিনি বলেন, "আমরা ক্ষমতায় আসার জন্য ব্যস্ত নই। তবে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাব, রাষ্ট্রপতি শাসন নয়, বরং রাজ্যের বিরুদ্ধে উপদ্রুত এলাকা আইন লাগু করা হোক।" পাশপাশি নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে সোমবার থেকে পোর্টাল খোলার কথাও ঘোষণা করলেন বিরোধী দলনেতা ।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা ও দলীয় কর্মী সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা-সহ একাধিক অভিযোগে রবিবার রাজভবনের সামনে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ধরনায় বসেছিল বিজেপি। এদিন বিজেপির ধরনা মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায়, প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ, বিশিষ্ট আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী প্রমুখ। সেই মঞ্চ থেকেই এদিন বিরোধী দলনেতা এই রাজ্যেও মণিপুরের মতো উপদ্রুত এলাকা আইন লাগুর দাবি তোলেন ।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, রায়গঞ্জে প্রায় 50 হাজার মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি । রানাঘাটেও এই সংখ্যাটা 50 হাজার । বাগদায় 10 হাজার জন ভোট দিতে পারেনি । মানিকতলায় আট ওয়ার্ডে ভোট লুট হয়েছে ৷ তিনি বলেন, "এর বিরুদ্ধে আমরা গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করব। আগামী 21 জুলাই বেলা 1টার সময় রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে এই গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের দাবি জানাচ্ছি ।"
এদিন বিরোধী দলনেতা জানান, নির্বাচন নিয়ে সমস্ত অভাব-অভিযোগ ও হিংসার বিষয়টিকে তাঁরা লিপিবদ্ধ করবেন। সরাসরি এগুলি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পর্যন্ত নিয়ে যাবেন তিনি। আর সে কারণেই আগামিকাল একটি বিশেষ পোর্টাল চালু করছেন শুভেন্দু অধিকারী। লোকসভা ও বিধানসভায় ভোট দিতে পারেননি যারা, যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের এই পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে বলেছেন তিনি। তাঁদের নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পর্যন্ত যাওয়া হবে বলেও জানান শুভেন্দু ।
আগামী 18 জুলাই রাজ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে পথে নামছেন বিরোধী দলনেতা। এদিন এই ধরনা মঞ্চ থেকেই সেই কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি । শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, "জিনিসপত্রের যেভাবে দাম বাড়ছে সাধারণ মানুষ খাবে কী?" আর তাই, 'এত দাম খাব কী ! মমতা যাবে কি !' এই স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে মিছিল করবে বিজেপি। এরপর বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধি নিয়ে আগামী 22 তারিখে সিইএসসি ঘেরাওয়ের ডাক দেন বিরোধী দলনেতা ।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, বাংলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের দুরবস্থার কথা নরেন্দ্র মোদির সামনে তুলে ধরতে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আটজনের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েছেন । তিনি বলেন," বিজেপি বনধ এবং ভাঙচুরের বিরোধী। তবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে আমরা পথে থাকব।" শুভেন্দু মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও একবার নবান্ন অভিযানের প্রয়োজন রয়েছে ৷ আগামী 17 জুলাই দলের সাংগঠনিক বৈঠক রয়েছে ৷ সেখানে এই নবান্ন অভিযানের প্রস্তাব দেবেন বিরোধী দলনেতা । এমনটাই এদিন জানান তিনি ৷
এদিন শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করে বলেন, "আমরা রাষ্ট্রপতি শাসন চাই না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন বসে থাকুন। ওর কাছে কোনও টাকা নেই । তবে আমরা চাই মণিপুরের মত ডিস্টার্বড এরিয়াস অ্যাক্ট রাজ্যে লাগু করে গুন্ডাদের সোজা করুক কেন্দ্রীয় সরকার আর প্যারামিলিটারি। আমরা এর দাবি জানাব ।"