হাওড়া, 14 নভেম্বর: রাজ্যের ছ’টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন ছিল বুধবার ৷ সেই ছয় আসনের মধ্যে একটি ছিল বিজেপির দখলে ৷ সেই আসন-সহ বাকিগুলিতে কি জয়ের আশা দেখছে না ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ! ভোট প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক সময়সীমা শেষ হওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর একটি মন্তব্য ঘিরে এমনই জল্পনা তৈরি হয়েছে ৷
বুধবার হাওড়ার শ্যামপুর এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন বিরোধী দলনেতা ৷ সেখানেই তাঁকে রাজ্যের ছ’টি আসনে উপনির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হয় ৷ সেই সময় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আসল নির্বাচনটা 2026 সালে হবে ৷’’ তাঁর এই মন্তব্য ঘিরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে যে রাজ্যের ছয় আসনে কি জয়ের আশা দেখছে না বিজেপি ?
উল্লেখ্য, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে যে ছ’টি আসনে উপনির্বাচন হল বুধবার, সেই আসনগুলির মধ্যে পাঁচটিতে (নৈহাটি, হাড়োয়া, তালডাংরা, মেদিনীপুর ও সিতাই) 2021 সালের বিধানসভা ভোটে জিতেছিল তৃণমূল ৷ ষষ্ঠ আসন, অর্থাৎ মাদারিহাটে 2016 ও 2021 সালে জিতেছিল বিজেপি ৷ সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের নিরিখেও ফলাফলে কোনও বদল হয়নি ৷
উপনির্বাচনে কি সেই একই পরিসংখ্যান বজায় থাকবে ? সেই প্রশ্নই ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় বিরোধী দলনেতাকে ৷ সেই প্রসঙ্গেই শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘আসল নির্বাচনটা 2026 সালে হবে ৷ আর আসল নির্বাচনে আমাদের রাষ্ট্রবাদী ও সনাতনীদের কাছে গণতন্ত্রের ডু অর ডাই । আমরা সেটা করে দেখাব ।’’
একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ বনাম বিজেপির লড়াই হয়েছে । শুধু হাড়োয়াতে সিপিএম-আইএসফ লড়াইয়ের চেষ্টা করলেও পারেনি সেইভাবে । এছাড়াও বাকি জায়গায় বিজেপির কর্মীরা লড়াই করেছে । বুথগুলো লুট করতে পারেনি ।’’
একই সঙ্গে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপির পোলিং এজেন্টদের হেনস্তার অভিযোগ তুলে ৷ তাঁর দাবি, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই বিজেপির পোলিং এজেন্টদেরকে ধমকানো, চমকানো, গ্রেফতার করা ও থানাতে বসিয়ে রাখার কাজ করেছে পুলিশ ৷ বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, ‘‘মেদিনীপুরে আমাদের দলের রাজ্য কমিটির সদস্য ধীমান কোলেকে মিথ্যা মামলাতে গ্রেফতার করেছে । এছাড়াও 25 জনের বেশি পোলিং এজেন্টকে গ্রেফতার করেছে । একইভাবে আদিবাসী প্রার্থী রাহুল লোহার, তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে থাকা লোকদেরকে আক্রমণ করা হয়েছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তারপরেও যেভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, আমরা তার তথ্য নিচ্ছি । গত চারটি উপনির্বাচনে তৃণমূল যেভাবে হিন্দু ভোটারদের আটকেছিল, এবারে আংশিকভাবে হয়তো সফল হয়েছে । তবে ওই একই কায়দায় রানাঘাট, বাগদা, রায়গঞ্জের মতো এলাকাতে হিন্দু ভোটারদের সম্পূর্ণ আটকাতে পারেনি । হিন্দু ভোটাররা 70 শতাংশ বেরিয়ে ভোট করার চেষ্টা করেছেন ।’’
এছাড়া বিরোধী দলনেতা নির্বাচন কমিশনের পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে সরব হন ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথাও কোথাও ভালো কাজ করেছে বলেও তিনি দাবি করেন ৷ তবে তাঁর মতে, সিতাই, মাদারিহাট, হাড়োয়াতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ভালো হওয়া উচিত ছিল ।