মেদিনীপুর, 16 অগস্ট: সিপিএমের জেলা সম্পাদক পদ থেকে সরানো হল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে । রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন জেলা সম্পাদক পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন সিপিআইএমের জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক বিজয় পাল ।
সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ৷ শুক্রবারই রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত এসে পৌঁছয় জেলায় । যদিও সুশান্ত ঘোষের দাবি, স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ জানিয়ে আপাতত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তিনি । সব মিলিয়ে জেলা সম্মেলনের আগেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ।
একসময় সুশান্ত ঘোষ ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা । কিন্তু 2011 সালে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর বেনাচাপড়ার কঙ্কালকাণ্ডে তার নাম জড়িয়ে যায় । এরপর দীর্ঘদিন তিনি জেলেও ছিলেন । তারপর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার পুনরায় দল তাকে রাজনীতিতে সুযোগ দেয় । দল তাকে জেলা সম্পাদক করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আসনে আসীন করে । সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সিপিআইএম পার্টিকে তুলে ধরার জন্য । কিন্তু সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় । তাতে এক মহিলার সুশান্ত ঘোষকে অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে দেখা যায় । যে ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে দল ৷
ওই মহিলা দলে অভিযোগ করার পাশাপাশি সুশান্ত ঘোষের শাস্তির দাবি করেন । যদিও সেই ঘটনায় সিপিআইএম রাজ্য কমিটি থেকে একটি কমিশন গঠন করা হয় । যেই কমিশন তদন্ত করে সুশান্ত ঘোষকে দোষী সাব্যস্ত করে । তারপরই তাঁকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷ যদিও এই নিয়ে মুখে কুলুপ সিপিএম নেতৃত্বদের ।
এই বিষয়ে সুশান্ত ঘোষের দাবি, বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি বিষয়টা জানেন এবং তিনিই যা বলার বলবেন ৷ এই বিষয়ে তাঁর কিছু বলার নেই ৷ যদিও অন্যদিকে নতুন দায়িত্ব পাওয়া জেলা সম্পাদক বিজয় পালের বক্তব্য, রাজ্য কমিটি চেয়েছে তাই তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে । তাছাড়াও তিনি দল থেকে অব্যাহতি জন্য আবেদন করেছিলেন তা গৃহীত হয়েছে । এছাড়াও রাজ্য কমিটিতে অভিযোগ জমা পড়েছিল ৷ তা খতিয়ে দেখে খোদ রাজ্য কমিটিই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ ভাইরাল ভিডিয়োর বিষয়টি শুনলেও পুরোটা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন ৷
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার বক্তব্য, এটা সম্পূর্ণ পার্সোনাল ৷ বিষয় কিন্তু তবু বলব উনার আদ্যোপান্ত রক্ত লেগে রয়েছে । উনি একজন খুনি নেতা । সিপিএম যে এরকম খুনি নেতাকেও পার্টির জেলা সম্পাদক করতে পারে তার থেকে বোঝা যায় যে সিপিএমের এখন কী অবস্থা ।