কলকাতা, 28 জানুয়ারি: বঙ্গ বিজেপির দুই হেভিওয়েট নেতা সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্য়ে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে ৷ আর এর মাশুল দিচ্ছে দল ৷ আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে কার্যত 'রসাতলে' যাচ্ছে দল । এবার এই অভিযোগে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে চিঠি লিখলেন বঙ্গ বিজেপির একাংশ ৷ ইমেলের মাধ্য়মে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা ৷
সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীকে একাধিক কর্মসূচিতে একসঙ্গে দেখা গেলেও, তাঁদের মধ্যে বিভেদ আরও বাড়ছে বলে মনে করছে দলের একাংশ ৷ সম্প্রতি, বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির প্রায় সবস্তরের নেতারা উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না রাজ্যের প্রধান বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী । স্বাভাবিকভাবেই, তাঁর অনুপস্থিত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ৷ উত্তরে, শুভেন্দুকে 'রাজ্যের অন্যতম ব্য়স্ত নেতা' বলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর সেই উত্তরের পর থেকেই দুই নেতার দূরত্ব নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয় দলের অন্দরে । পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিষয়টি জানিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে চিঠি লেখেন বঙ্গ বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি সামসুর রহমান ৷
সামসুর রহমানের কথায়, "48 ঘণ্টার ব্যবধানে রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা যে ভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তাতে নিচু তলার কর্মীদের মনোবল ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে ৷ গেরুয়া শিবিরে বিভাজনের সৃষ্টি হচ্ছে । দলের 'সদস্য অভিযানে' মরা গাঙে জোয়ার আসার পরিবর্তে আরও ভাঁটা পড়ছে । আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনের জন্য যা মোটেই ভালো নয় ৷ ফলে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্রুত এর একটি বিহিত করুক ৷"
বঙ্গে সফরে এসে 1 কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য়মাত্রা ঠিক করে দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ অবশ্য়, সেই অভিযান কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে ৷ দলীয় সূত্রে খবর এখনও পর্যন্ত, মেরে-কেটে 30 লক্ষের কিছু বেশি সদস্য সংগ্রহ হয়েছে ৷ 'অ্যাক্টিভ' সদস্য সংখ্যাও 10 হাজার পার করতে পারেনি । দলের নেতা-কর্মীদের মতে, এর কারণ বঙ্গ বিজেপি দুই শিবিরের মধ্য়ে ফাটল ৷
কর্মীদের একাংশ মনে করছে, দলের মধ্যে রেসারেসি চলছে । সমান্তরাল কর্মসূচি গ্রহণ করে চলেছেন বিরোধী দলনেতার শিবির ও রাজ্য বিজেপির শিবির । বেশ কিছু দলীয় কর্মসূচিতে বিরোধী দলনেতাকে দেখা যায় না । তিনি নিজের মতো কর্মসূচি তৈরি করেন বলে অভিযোগ ৷ এর ফলে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছে ৷ 2026 সালের বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি কোনও পদক্ষেপ করুক, দাবি বঙ্গ বিজেপির নেতা-কর্মীদের ৷