বালুরঘাট, 5 জুন: লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির আসন কমে যাওয়ার দায় নিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, "যেহেতু রাজ্য সভাপতির পদে আছি, দায় আমাকে নিতেই হবে। তবে রাজ্য সভাপতি সব সিদ্ধান্ত একা নেন না। একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বিজেপিতে কারও নেই। দায় স্বীকার করতে আমি পিছপা হই না। ভয়ও পাই না। এরপর দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।" পাশাপাশি হেরে গিয়ে যেভাবে দলের একাংশকে দায়ী করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, তাতে অবাকই হয়েছেন সুকান্ত।
উত্তরবঙ্গের বিজেপির ফল তুলনায় ভালো হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গে ভরাডুবি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা অংশ মনে করছে, উত্তরবঙ্গে সুকান্ত গড় রক্ষা করতে পেরেছেন। দক্ষিণবঙ্গে সেই কাজটাই করতে পারেননি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "আমাদের দলে ব্যক্তি-রাজনীতি চলে না। উত্তরবঙ্গে আমরা সাংগঠনিকভাবে বিশেষ শক্তিশালী বলেই জিতেছি। দক্ষিণবঙ্গে হয়তো আমাদের শক্তি কম ছিল বলে হারতে হয়েছে। সেটা আগামিদিনে বিশ্লেষণ করতে হবে।"
লোকসভা নির্বাচনের গণনার সব খবর পড়ুন এখানে
নিজের জয়ের বিষয়ে সুকান্ত বলেন, "জানতাম যতই কষ্ট হোক শেষ হাসিটা আমরা হাসব। প্রশাসনের তরফ থেকে নানা উপায়ে আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তারপরও আমরা জিতেছি। এই জেলার মানুষ দু'হাত তুলে আশীর্বাদ করেছে। শুধু উত্তরবঙ্গ নয় বাংলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কঠিন লড়াই এখানে ছিল। বিপক্ষে ছিলেন 30-40 বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞয় সমৃদ্ধ নেতা। তাছাড়া চার-পাঁচবার মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভাও করেছেন এখানে। এত কিছুর সঙ্গে লড়ে আমি জয়লাভ করেছি। এটা বিশাল বড় প্রাপ্তি।"
নির্বাচনের পর সারা রাজ্যে সন্ত্রাস ও বিরোধী দলগুলোর উপর আক্রমণ নিয়ে তিনি বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস এভাবেই ভোটে জিতছে। এভাবেই রাজ্যটাকে চালাচ্ছে। এটাই ওদের মডেল। এই মডেল একসময় সিপিএমও চালাত, কিছুদিন চলেছে। আঞ্চলিক দল এরকম মডেল তৈরি করে কিছুদিন চলে। তারপরে মানুষ এদের উচিত শিক্ষা দেয়। বাংলার মানুষ তৃণমূলকে কবে শিক্ষা দেবে সেটাই দেখার। আমার বিশ্বাস মানুষ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে অন্যরকমের ফল হবে।"
এদিকে নিজের পরাজয়ের পর ঘুরিয়ে দলেরই একাংশকে দায়ী করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, দলে কাঠিবাজি ছিল। চক্রান্ত ছিল। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, " এটা অপ্রত্যাশিত। দিলীপদা আমাদের সিনিয়র লিডার৷ তাঁর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার কিছু বলার নেই ৷ শুধু এটুকুই বলব, তিনি জিতলে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব খুশি হতাম৷ মানুষ কীর্তি আজাদকে ভোট দেবে এটা আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। হয়তো কীর্তি আজাদকে পাঁচ বছরে পাঁচ বার দেখা গেলেও সেটা হবে সৌভাগ্য। তবু মানুষ তাঁকে ভোট দিয়েছেন। দেখা যাক মানুষ কী পান।