মালদা, 9 এপ্রিল: আগেই সরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছিল ৷ এ বার বামপন্থী জোট থেকে পুরোপুরি সরে গেল সোশালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়া (কমিউনিস্ট) ওরফে এসইউসিআই ৷ মঙ্গলবার এসইউসিআইয়ের মালদা জেলা কমিটির তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সিপিএমের একগুঁয়েমির জন্য ফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে এসে রাজ্যের 42টি আসনেই আলাদা প্রার্থী দিচ্ছে তারা ৷
সাতাত্তরে জন্ম নেওয়া বামফ্রন্ট যে আর তার পুরোনো অবস্থানে নেই, তা 2024 লোকসভা ভোটের আগে আরও একবার প্রমাণিত হল বলে দাবি করেছে এসইউসিআই ৷ তারা বলেছে, যে বামপন্থী জোটকে নিয়ে প্রমোদ দাশগুপ্ত, জ্যোতি বসুরা স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই জোটের এই পরিস্থিতি কেন তা নিয়ে বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমরা কী বলবেন, তা জানতে উৎসুক বাম মনোভাবাসম্পন্ন মানুষজন ৷ কিন্তু সিপিএম-এর শীর্ষনেতাদের এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার আগেই কংগ্রেস ও আইএসএফকে জোটসঙ্গী করার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে দূরত্ব বাড়িয়েছে আরও দুই-এক শরিক দল ৷
এসইউসিআই মালদা জেলা কমিটি জানিয়ে দিয়েছে, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের 42টি আসনেই প্রার্থী দিচ্ছে তারা ৷ এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করার পরে বাম দলগুলির একাংশ থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, এসইউসিআইয়ের মতো ছোট কমিউনিস্ট দল যে পদক্ষেপ করার সাহস দেখাতে পারে, বড় শরিক সিপিএম তা পারছে না কেন ?
আজ দুপুরে মালদা প্রেস কর্নারে সাংবাদিক বৈঠক করে এসইউসিআইয়ের মালদা জেলা সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, “আমরা বামপন্থী দল । মার্কসবাদ, লেনিনবাদ চিন্তাধারায় আমাদের এই দল চলে । আমরা সিপি(আই)এমের শরিকদল নই । তবে সিপিএমও যেহেতু একটি বামপন্থী দল, তাই অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সিপিএমের সঙ্গে জোটবদ্ধ ভাবে লড়াই করেছি । গত 21 জানুয়ারি আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সিপিএমকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিচারে নির্বাচনী জোটের বদলে বামপন্থীদের নিয়ে আন্দোলনের জোটে আহ্বান জানানো হয়েছিল । কিন্তু সিপিএম কোনও রকম আলোচনা না করেই জোট ভেঙে দেয় । বর্তমানে আমরা সকলেই দেখতে পাচ্ছি সিপিএম ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নামে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছে । এই জোটে তৃণমূল, আইএসএফের মতো দলও রয়েছে । কিন্তু আমরা কোনওভাবেই এই জোটকে সমর্থন করতে পারি না । তাই এসইউসিআই পশ্চিমবঙ্গের 42 আসনেই এককভাবে লড়াই করবে । মালদা জেলার 2টি আসনে আমরা প্রার্থী দিচ্ছি । উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কালীচরণ রায় ও দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন অংশুধর মণ্ডল । ইতিমধ্যে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেছে । দেশজুড়ে 151টি আসনে আমাদের দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন । এর পরেও যদি সিপিএম গণআন্দোলনের জন্য একত্রিত হতে চায়, তবে আমরা আমন্ত্রণ জানাব । তবে ভোটের স্বার্থে আমরা পিছপা হব না ।”
আরও পড়ুন: