কলকাতা, 5 নভেম্বর: কলকাতার দুই ফুসফুস-উত্তরের সুভাষ সরোবর আর দক্ষিণে রবীন্দ্র সরোবর বন্ধ থাকবে ছটপুজোর সময়। এই দুটি সরোবর কলকাতার পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ আদালত এই দুটি জায়গায় ছটপুজোর আচার আচরণ পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু তাতেও সেই প্রবণতা কমেনি।
ফলে দূষণ ঠেকাতে ছটের আগের দিন থেকে শুরু করে পরের দিন পর্যন্ত বন্ধ থাকছে এই দুটি সরোবর। সেই মর্মে ইতিমধ্যেই নোটিশও পড়েছে দুই সরোবরের গেটে ।
ধীরে ধীরে শীতের আমেজ অনভূত হতেই কলকাতার বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বাড়তে থাকে। উপর দিকে উঠতে থাকে দূষণ-সূচক। আর দীপাবলি ও ছট দুই উৎসবেই লাগাম ছাড়া বাজি ফাটে। সরোবর জলে নেমে স্নান করা থেকে শুরু করে প্রদীপও ভাসানো হয়। ফলে জলের গুণগত মন নষ্ট হয়। নানা রাসায়নিকের জেরে বিপর্যস্ত হয় জীববৈচিত্র্য। জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে। ফলে মাছ-সহ নানা জীবের মৃত্যু হয়। ক্ষতি হয় গাছের। ক্ষতি হয় পাখিদেরও। শব্দদূষণ থেকে বায়ুদূষণ সবটাই ঘটে এই কর্মকাণ্ডে।
তাই পরিবেশকর্মীদের লাগাতার লড়াই ও পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শেষমেশ তৎপর হয় প্রশাসন। তাই কয়েক বছর ধরে ছটপুজোর সময় বন্ধ থাকে এই দুই সরোবর। আগামিকাল রাত 8টা থেকে বন্ধ হচ্ছে সুভাষ সরোবর ও রবীন্দ্র সরোবর। বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকছে ফের শুক্রবার বেলা থেকে গেট খোলা হবে। দুই সরোবরের প্রতি গেটে এই মর্মে নোটিশ লাগিয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। এই সিদ্ধান্তে জেরে এই দু'দিন প্রাতঃভ্রমণ-সহ সমস্তরকম কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে সরোবরের অভ্যন্তরে।
পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "সরোবরকে ধ্বংস করার হচ্ছিল। পরিবেশ আদালতের নির্দেশে আর পরিবেশকর্মীদের আন্দোলনের চাপে শেষমেশ প্রশাসন তৎপর হয়েছে। তারা আগে থাকতেই সরোবরের পরিবেশ রক্ষায় সমস্ত গেট বন্ধ করে সকলের প্রবেশ নিষেধ করেছে। যারা প্রাতঃভ্রমণকারী তাঁদের দু'দিন অসুবিধা হলেও কলকাতার এই দুই সরোবর রক্ষা পাওয়া আরও অনেক বড় বিষয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বেশকিছু লোকজন নজরদারি এড়িয়ে সরোবরে ঢুকে পড়েছে। সেটাও বন্ধ করা দরকার।"