নদিয়া, 7 জুন: কলেজ সংস্কারের কাজের বরাত দেওয়া নিয়ে অশান্তির জেরে অধ্যাপকের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল ৷ এই নিন্দনীয় ঘটনার সাক্ষী নদিয়ার শান্তিপুর কলেজ ৷ পড়ুয়াদের পালটা দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি । ওই অধ্যাপক এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছেন ৷ তারই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন ছাত্ররা ৷ সে সময় ধাক্কাধাক্কিতে অধ্যাপকের মাথায় আঘাত লাগে ৷ কেউ তাঁর গায়ে হাত দেয়নি ।
আক্রান্ত ইতিহাসের অধ্যাপক রামকৃষ্ণ মণ্ডলের দাবি, সম্প্রতি কলেজের বাউন্ডারি নির্মাণের কাজ শুরু হয় ৷ কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর নির্দেশে তিনি ওই কাজ দেখাশোনা করতেন ৷ প্রায়শই তাঁর কাছে হুমকি আসত ৷ অধ্যাপকের আরও দাবি, কয়েকজন বহিরাগতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হুমকি দিতেন কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ। দাবি একটাই, কাজের বরাত তাঁদের দিতে হবে। এমনকী অধ্যাপকের বাড়ি গিয়েও হুমকি দিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে বরাত না পেয়ে তোলা চেয়ে হুমকি দিত কয়েকজন। কিন্তু তোলা না দেওয়ায় শেষমেশ শুক্রবার তাঁকে মারধর করা হয় বলে দাবি অধ্যাপকের।
এ বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও সুবিচার চেয়েছেন অধ্যাপক। অভিযোগ, এদিন তাঁকে লক্ষ্য করে প্রথমে অশ্রাব্য গালিগালাজ শুরু হয়। পড়ে কলেজের মধ্যেই তাঁর গায়ে হাত পড়ে। এমনকী কলেজের কর্মচারীরা প্রতিবাদ করতে গেলেও তাঁদের মধ্যে থেকেও একজনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ অধ্যাপকের।
অন্যদিকে, কলেজের প্রবেশদ্বার অবরুদ্ধ করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। পড়ুয়াদের দাবি, ওই অধ্যাপক এক ছাত্রীর হাত ধরে টেনে নির্জনে স্থানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। এমন আচরণের প্রতিবাদ করেছেন বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী। অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এমন মারাত্মক অভিযোগ তুললেও শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি পড়ুয়ারা ।
এই প্রসঙ্গে অধ্যাপকের দাবি, তাঁকে ফাঁসাতেই এমন মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে এমন কোনও কাজ তিনি করেননি। তাই কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ যাতে সংরক্ষণ করে রাখা হয় তারও দাবি জানিয়েছেন তিনি । শান্তিপুর কলেজের প্রিন্সিপাল শুচিস্মিতা সান্যাল জানান, একজন অধ্যাপক এ ধরনের কাজ করেছেন তা তিনি বিশ্বাস করেন না ৷ পাশাপাশি তাঁকে মারধরও করা হয়নি বলে মনে করেন তিনি ৷ ঠিক কী হয়েছিল তা জানতে পুলিশ যদি তদন্ত করে তাহলে কলেজ সিসিটিভি ফুটেজ দিয়ে সাহায্য করবে বলে জানান প্রিন্সিপাল। ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়ক ব্রজ গোস্বামী বলেন, "আমার আলাদা করে কিছু বলার নেই। অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা যদি সত্যি হয় তাহলে তিনি শাস্তি পাবেন। আবার পড়ুয়ারা যদি মারধর করে থাকেন তাহলে তাঁরাও পার পাবেন না।"