ETV Bharat / state

ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে সাইবার প্রতারণা চক্র ! 2 জেলায় পৃথক অভিযানে গ্রেফতার 4

মালদা ও উত্তর দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার হয়েছে ট্যাব দুর্নীতিতে অভিযুক্ত 4 জন ৷ পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে ৷

TAB CORRUPTION CASE
রাজ্যে ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত 4 ৷ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 12, 2024, 6:27 PM IST

বর্ধমান, 12 নভেম্বর: রাজ্যের প্রায় তিনশোরও বেশি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার সরকারি টাকা অজানা ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে ৷ সেই তালিকায় পূর্ব বর্ধমানের 20টি স্কুলের নাম ছিল ৷ যার তদন্তে নেমে মালদার বৈষ্ণবনগর থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করল বর্ধমান থানার পুলিশ ৷ অন্যদিকে, যৌথ অভিযানে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে 3 জনকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ ৷

উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমানের প্রায় কুড়িটি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের সরকারি টাকা ভিনরাজ্য ও এরাজ্যের অন্য জেলার বেনামি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার অভিযোগ ওঠে ৷ যার তদন্ত নেমে মালদার বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে 29 বছরের হাসেম আলিকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ ৷

Tab Corruption Case
ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে বৈষ্ণবনগর থেকে ধৃত হাসেম আলি (পিছনে নীল শার্ট) ৷ (নিজস্ব চিত্র)

পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের 31 অক্টোবর বর্ধমান সিএমএস স্কুলের তরফে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানানো হয় ৷ সেখানে বলা হয়, 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের অধীনে একাদশ শ্রেণির 28 জন পড়ুয়া ট্যাব কেনার টাকা পায়নি ৷ পুরো জেলার 20টি স্কুল থেকে এই ধরনের অভিযোগ জমা পড়েছিল ৷

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উপভোক্তা পড়ুয়াদের সব টাকা ক্রেডিট হলেও যে অ্যাকাউন্টে টাকা যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে টাকা যায়নি ৷ পরিবর্তে স্কুলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা চলে গিয়েছে ৷ এরপরেই সাইবার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটা টিম তৈরি করা হয় ৷ তাঁরা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন ৷ যে সব ভুয়ো ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছিল, সেগুলি পুলিশ চিহ্নিত করে ৷ ওই অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে 25টি অ্যাকাউন্টেই টাকা হোল্ড করানো হয় ৷

এরপর পুলিশের টেকনিক্যাল টিমের সাহায্য নিয়ে তদন্ত চলতে থাকে ৷ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে একজনকে শনাক্ত করা হয় ৷ সেই মতো সোমবার মালদায় বর্ধমান পুলিশের একটা দল অভিযান চালিয়ে বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে হাসেম আলিকে গ্রেফতার করে ৷ পুলিশ জানতে পেরেছে সাইবার অপরাধীরা অন্য অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল ৷ কিন্তু, কীভাবে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য সাইবার অপরাধীদের হাতে গিয়ে পৌঁছাল সেটা ভাবাচ্ছে পুলিশকে ৷

কীভাবে পড়ুয়াদের টাকা অন্যদের অ্যাকাউন্টে ?

পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হাসেম আলি নামে ওই যুবক চলতি বছরের জুলাই মাসে বাংলা শিক্ষক পোর্টালে আনঅথোরাইজডভাবে এন্ট্রি করেন এবং অ্যাকাউন্ট মডিফাই করান ৷ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই পোর্টালের অ্যাক্সেস পেয়ে যান প্রতারক ৷ এরপর কিছু পড়ুয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দিয়ে ভুয়ো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বসিয়ে দেন ৷ এরপর সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা জমা পড়ে ৷ যার কোনওটাই পড়ুয়াদের নয় ৷

তবে, 28টার মধ্যে 25টি অ্যাকাউন্টের টাকা হোল্ড করানো গিয়েছে ৷ বাকি তিনটে অ্যাকাউন্টের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ ৷ তবে, হাসেম আলি যে সব অ্যাকাউন্ট নম্বরগুলি দিয়েছিলেন সেগুলি কাদের তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ এর সঙ্গে স্কুলের কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ৷ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, হাসেম আলি মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই কাজ করতেন ৷

ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে মালদা থেকে 1 জনকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান পুলিশ ৷ (ইটিভি ভারত)

অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশের একটি বিশেষ দল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চোপড়া থেকে 3 জনকে গ্রেফতার করেছে ৷ জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক স্কুলে ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে জড়িত রয়েছেন এই তিনজন ৷ তাঁদের পরিচয় সাদিক হোসেন, মোবারক হোসেন এবং আশারুল হোসেন ৷ এর মধ্যে সাদিক এবং মোবারক চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা ৷ আশারুলের বাড়ি ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ এলাকায় ৷

ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার জবি থমাস বলেন, "পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশের একটি বিশেষ দল আজ অভিযান চালায় ৷ সঙ্গে ইসলামপুর জেলা পুলিশও ছিল ৷ এই যৌথ অভিযানে চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আমরাও সবরকমের সহযোগিতা করেছি ৷"

বর্ধমান, 12 নভেম্বর: রাজ্যের প্রায় তিনশোরও বেশি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার সরকারি টাকা অজানা ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে ৷ সেই তালিকায় পূর্ব বর্ধমানের 20টি স্কুলের নাম ছিল ৷ যার তদন্তে নেমে মালদার বৈষ্ণবনগর থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করল বর্ধমান থানার পুলিশ ৷ অন্যদিকে, যৌথ অভিযানে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে 3 জনকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ ৷

উল্লেখ্য, পূর্ব বর্ধমানের প্রায় কুড়িটি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের সরকারি টাকা ভিনরাজ্য ও এরাজ্যের অন্য জেলার বেনামি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার অভিযোগ ওঠে ৷ যার তদন্ত নেমে মালদার বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে 29 বছরের হাসেম আলিকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ ৷

Tab Corruption Case
ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে বৈষ্ণবনগর থেকে ধৃত হাসেম আলি (পিছনে নীল শার্ট) ৷ (নিজস্ব চিত্র)

পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের 31 অক্টোবর বর্ধমান সিএমএস স্কুলের তরফে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানানো হয় ৷ সেখানে বলা হয়, 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের অধীনে একাদশ শ্রেণির 28 জন পড়ুয়া ট্যাব কেনার টাকা পায়নি ৷ পুরো জেলার 20টি স্কুল থেকে এই ধরনের অভিযোগ জমা পড়েছিল ৷

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উপভোক্তা পড়ুয়াদের সব টাকা ক্রেডিট হলেও যে অ্যাকাউন্টে টাকা যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে টাকা যায়নি ৷ পরিবর্তে স্কুলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা চলে গিয়েছে ৷ এরপরেই সাইবার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটা টিম তৈরি করা হয় ৷ তাঁরা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন ৷ যে সব ভুয়ো ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছিল, সেগুলি পুলিশ চিহ্নিত করে ৷ ওই অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে 25টি অ্যাকাউন্টেই টাকা হোল্ড করানো হয় ৷

এরপর পুলিশের টেকনিক্যাল টিমের সাহায্য নিয়ে তদন্ত চলতে থাকে ৷ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে একজনকে শনাক্ত করা হয় ৷ সেই মতো সোমবার মালদায় বর্ধমান পুলিশের একটা দল অভিযান চালিয়ে বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে হাসেম আলিকে গ্রেফতার করে ৷ পুলিশ জানতে পেরেছে সাইবার অপরাধীরা অন্য অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল ৷ কিন্তু, কীভাবে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য সাইবার অপরাধীদের হাতে গিয়ে পৌঁছাল সেটা ভাবাচ্ছে পুলিশকে ৷

কীভাবে পড়ুয়াদের টাকা অন্যদের অ্যাকাউন্টে ?

পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হাসেম আলি নামে ওই যুবক চলতি বছরের জুলাই মাসে বাংলা শিক্ষক পোর্টালে আনঅথোরাইজডভাবে এন্ট্রি করেন এবং অ্যাকাউন্ট মডিফাই করান ৷ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই পোর্টালের অ্যাক্সেস পেয়ে যান প্রতারক ৷ এরপর কিছু পড়ুয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দিয়ে ভুয়ো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বসিয়ে দেন ৷ এরপর সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা জমা পড়ে ৷ যার কোনওটাই পড়ুয়াদের নয় ৷

তবে, 28টার মধ্যে 25টি অ্যাকাউন্টের টাকা হোল্ড করানো গিয়েছে ৷ বাকি তিনটে অ্যাকাউন্টের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ ৷ তবে, হাসেম আলি যে সব অ্যাকাউন্ট নম্বরগুলি দিয়েছিলেন সেগুলি কাদের তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ এর সঙ্গে স্কুলের কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ৷ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, হাসেম আলি মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই কাজ করতেন ৷

ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে মালদা থেকে 1 জনকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান পুলিশ ৷ (ইটিভি ভারত)

অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশের একটি বিশেষ দল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চোপড়া থেকে 3 জনকে গ্রেফতার করেছে ৷ জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক স্কুলে ট্যাব দুর্নীতি-কাণ্ডে জড়িত রয়েছেন এই তিনজন ৷ তাঁদের পরিচয় সাদিক হোসেন, মোবারক হোসেন এবং আশারুল হোসেন ৷ এর মধ্যে সাদিক এবং মোবারক চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা ৷ আশারুলের বাড়ি ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ এলাকায় ৷

ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার জবি থমাস বলেন, "পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশের একটি বিশেষ দল আজ অভিযান চালায় ৷ সঙ্গে ইসলামপুর জেলা পুলিশও ছিল ৷ এই যৌথ অভিযানে চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আমরাও সবরকমের সহযোগিতা করেছি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.