কলকাতা, 5 এপ্রিল: রাজভবনের তরফে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই আবহে রাজ্যপালের রিপোর্ট কার্ডের পালটা জবাব দিল রাজ্য সরকার। পালটা জবাবে রাজ্যের তরফ থেকে চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, রাজ্যপালকে সংবিধানের পাঠও পড়িয়েছে রাজ্য সরকার ৷ আর সেই জায়গা থেকেই ভোটের উত্তাপের মাঝেই আরও একবার জমজমাট হয়ে উঠল রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের সংঘাত ।
বৃহস্পতিবার সকালেই রাজভবনের তরফে পর পর দু’টি টুইট (বর্তমান এক্স) করা হয় ৷ যেখানে সরাসরি রাজভবনের তরফে অভিযোগ করা হয়, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে রাজভবনের ৷ যদিও সেই টুইট পরে মুছে দেয় রাজভবন ৷ আর রাতেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে শিক্ষামন্ত্রী পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করেন রাজ্যপাল ৷ শুক্রবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট ভাষায় রাজ্যপালকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে রাজ্যপালের সুপারিশ সংবিধানসম্মত নয়। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এবং কেরালা হাইকোর্টের রায়ের উদাহরণ টেনে এও বলা হয়েছে, রাজ্যপাল যে কাজ করছেন তা আইনসিদ্ধও নয়। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে রাজ্যপালের উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটা অচল অবস্থার মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী এবং পড়ুয়ারাও তার সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছেন।
এদিন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল এই অংশটি যেখানে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে রাজ্যপালের পদক্ষেপ আসলে রাজ্য সরকারের ক্ষমতাকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা। এদিন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যপালের বক্তব্যের পালটা হিসাবে যে নয় পাতার চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে রাজ্য সরকারের এই বক্তব্যের কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পয়েন্টস করে করে রাজ্যপালকে তাঁর অবস্থান নিয়েও জবাব দেওয়া হয়েছে। এই চিঠিতে রাজ্য সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, রাজ্যপাল তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। রাজ্য সরকার এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে তিনি একতরফাভাবে তাঁর দখলদারি কায়েম করতে চাইছেন। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্মক্ষমতা হ্রাস করতে চাইছেন রাজ্যপাল, এমন অভিযোগও করেছে রাজ্য।
রাজ্যের অভিযোগ, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাঁর খেয়াল খুশিমতো চালাতে চাইছেন। এদিন রাজ্য সরকারের লেখা চিঠিতে সরকারের অবস্থান যথেষ্টই কড়া বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন